নদীপাড়ের ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে একটি মহল। ছবি : কালবেলা

নদীপাড়ের ফসলি জমিতে মাটি কাটার মহোৎসব

দীর্ঘদিন ধরেই বরিশালের বাকেরগঞ্জে বেশিরভাগ খাল-বিল, নদী-নালা ও শত শত একর ফসলি জমির মাটি কেটে চলেছে ভূমিখেকোরা। সেই মাটিখেকোরা এখন হানা দিয়েছে পাণ্ডব নদীর কলসকাঠী ইউনিয়নের পূর্ব বাগদিয়া নদীর পাড়ের ফসলি জমিতে।

ভেকু দিয়ে উর্বর ফসলি জমির ওপরের এক-দেড় হাত (টপ সয়েল) মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে একদিকে জমির উর্বরতা হারিয়ে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে বাকেরগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র।

সম্প্রতি বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী ইউনিয়নের ঢাপরকাঠী ও কবাই ইউনিয়নের লক্ষ্মীপাশা গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড় থেকে শত শত বিঘা ফসলি জমির মাটি কেটে বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীভাঙনের হুমকিতে ফেলা হচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিন জানা যায়, উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পূর্ব বাগদিয়া পাণ্ডব নদীর পাড় থেকে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কম দামে কিনে এবং সরকারি খাস জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে।

স্থানীয় কৃষক সাত্তার হাওলাদার জানান, এখনো ফ্যাসিস্টে আওয়ামী লীগ নেতারা ও ফ্যাসিস্টের দোসররা এলাকার প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলছে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং জমি উর্বরতা হারাচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে একটি সিন্ডিকেট এসব মাটিখেকোদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মাটি বাণিজ্য করার সুযোগ করে দিচ্ছে। অনেক মাটি ব্যবসায়ীরা পুকুর খননের কথা বলে প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গোপনে মাটি বিক্রি করছে বিভিন্ন জায়গায়। আবার এই সিন্ডিকেট সরকারি খাস ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে প্রশাসনের দোহাই দিয়ে।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বলেন, শুনেছি পাণ্ডব নদীর তীরবর্তী ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। শিগগির মাটিখেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।