লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেওয়া খলিলের খোঁজে মেঘনায় স্বজনরা
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমোহনগামী এমভি মানিক-১১ লঞ্চ থেকে মধ্য রাতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে মেঘনা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া যুবকের নাম মো. খলিল।
মো. খলিল লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের তারাগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন খলিল।
সোমবার দিনব্যাপী খলিলের দুই ভাই মনির ও মফিজ ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীর চাঁদপুর, হিজলা ও কালিগঞ্জ এলাকায় খুঁজতে থাকেন। তারা ভাইয়ের লাশটাও যেন পায় এই আশায় নদীতেই কাটান সারা দিন।
এর আগে ভাই মনির বরিশালের হিজলা থানায় খলিলের নিখোঁজ থাকায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ঝাঁপ দেওয়ার সময় লঞ্চ ওই থানাসংলগ্ন হওয়ায় সেখানে সাধারণ ডায়েরি করতে হয় বলে মনির জানান।
এদিকে নিখোঁজ খলিলের স্ত্রী ও ৩টি শিশুসন্তান রয়েছে। তারাও এখন অসহায়। খলিল কয়েক মাস আগে সন্ত্রাসী হামলায় মাথায় এবং অন্যান্য শারীরিক আঘাতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। চিকিৎসার পরও তিনি স্বাভাবিক হননি বলে পরিবার জানায়।
শনিবার রাতে কালিগঞ্জ নামক স্থানে মানিক-১১ থেকে লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেয় খলিল। ঝাঁপ দেওয়ার পর থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা সদরঘাট থেকে ভোলার লালমোহনগামী এমভি মানিক-১১ লঞ্চ ছেড়ে আসে। ওই লঞ্চে চড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন খলিল।
লঞ্চের পরিদর্শক বাবু জানান, এক ব্যক্তি লঞ্চ ছাড়ার পর থেকেই পেছনে গিয়ে কার্নিশে গান গাইতে থাকেন। তাকে আমরা লঞ্চের ভেতরে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি রান্না করার খুন্তি দিয়ে মারতে তেড়ে আসেন। তাকে অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল ভেতরে আনার। তবুও আনা সম্ভব হয়নি। রাত সাড়ে ১২টার দিকে লঞ্চ কালিগঞ্জ নামক স্থানে এলে আচমকা ওই ব্যক্তি ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নদীতে ঝাঁপ দেন। তখন যাত্রীরা টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে লঞ্চ ঘুরিয়ে তল্লাশি করা হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা তল্লাশি করার পরও ঝাঁপ দেওয়া ব্যক্তির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বাধ্য হয়ে লঞ্চ আবার ঘুরিয়ে লালমোহনের উদ্দেশে চলে আসি।
যাত্রীদের সূত্র জানায়, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে। লোকটি মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও সে অনিরাপাদভাবে লঞ্চের পেছনের কার্নিশে প্রায় ৪ ঘণ্টা অবস্থান করার পরও তাকে ভেতরে আনার জন্য জোর চেষ্টা করা হয়নি। ওই ব্যক্তির নাম ও পরিচয় কেউ জানে না। শেষপর্যন্ত তার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা কেউ বলতে পারেন না।
লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, লঞ্চ কর্তৃপক্ষ থেকে অবহিত করা হয়েছে। তবে ঘটনাস্থল বরিশালের হিজলা থানায়।