বকশিশের নামে চাঁদাবাজি

বকশিশের নামে চাঁদাবাজি

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বগা ফেরিতে ইজারা বাতিল হলেও বকশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফেরিতে যাত্রী পরিবহন থেকে অর্ধ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। ফেরি পরিচালনায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও স্থানীয় ১০ জন অতিরিক্ত লোককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তারা সিন্ডিকেট করে বকশিশ নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে। ফেরির দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা হচ্ছেন মোস্তাফিজুর রহমান, ওয়ার্ক সুপারভাইজার এনামুল এবং শ্রমিক সাব্বির। আর বকশিশের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়কারীরা হলেন শাহীন, বাদল, রফিক, কাইয়ুম, নুরুজ্জামান, রাকিব, কবির, জাফর, জুলহাস, সালেহ ও শাহ আলম।

সরেজমিন প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে ১৩০টি গাড়ির যাত্রী পরিবহন থেকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে আদায় হচ্ছে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা। ৫০ থেকে ৬০টি ট্রাক থেকে গড়ে ৫০ টাকা করে আদায় হয় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। মিনিবাস, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, অটো ও টমটমসহ সব মিলে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। পরিবহনের নির্ধারিত টোলের বাইরে ৩০ থেকে ৫০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়ায় অতিষ্ঠ পরিবহনের চালক ও সুপারভাইজাররা।

এ বিষয়ে বাউফল-ঢাকা রুটের পরিবহন সুপারভাইজার কবির অভিযোগ করে বলেন, বকশিশ না দিলে ফেরির লোকজনের হাতে নাজেহাল হতে হয় এমনকি গাড়ি ফেরিতে উঠতে দেওয়া হয় না। বকশিশের টাকা দেওয়া হলে তবে উঠতে দেওয়া হয়।

চালক সাইফুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফেরিতে উঠলেই বকশিশ আদায়কারীরা গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বকশিশ চায়। অতিরিক্ত ৫০ টাকা দিতে না চাইলে ৩-৪ জন মারতে তেড়ে আসে। নাজেহালের ভয়ে গাড়ি চালকরা তাদের দাবিকৃত বকশিশ দিতে বাধ্য হন। একই অভিযোগ স্থানীয় মোটরসাইকেল ও অটো চালকদের। প্রতিটি মোটরসাইকেল ও অটোর সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৫ টাকা কিন্তু ১০-২০ টাকা হারে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।

এলাকার জামাল উদ্দিন জানান, সরকার নির্ধারিত ভাড়া থাকলেও বকশিশের নামে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে ফেরিঘাটের লোকদের। সাধারণ মানুষের স্বার্থে সরকারের নজর দেওয়া দরকার এ বিষয়ে।

পটুয়াখালী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল হোসেন বলেন, আমাদের সওজ ফেরি বিভাগ থেকে ৪ জন দেওয়া হয়েছে। জনবল সংকটের কারণে স্থানীয় ৫-৭ জন লোক দিয়ে টোল আদায় করানো হয়। সরকার নির্ধারিত ফেরি ভাড়ার চার্ট দেওয়া আছে। অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।