ঘুস ছাড়া কাজ হয় না

ঘুস ছাড়া কাজ হয় না

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা নির্বাচন অফিস সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে। ঘুস ছাড়া যেন কোনো কাজই হয় না সেখানে। অফিস সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন কাজে সেবাপ্রত্যাশীদের দিতে হয় বিভিন্ন অঙ্কের ঘুস। সংশ্লিষ্ট অফিসের এমন কর্মকাণ্ডের কাছে যেন অসহায় বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে দরিদ্র এ উপজেলার সেবাপ্রত্যাশী বাসিন্দারা।

উপজেলা সদরের কাটাখালী গ্রামের আবু তৈয়ব সিকদারের ছেলে মো. হালিম অভিযোগ করেন, আগস্ট মাসের শেষের দিকে তিনি নতুন ভোটার হওয়ার কাজে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যান। সেখানে ভোটার কাজের দায়িত্বে থাকা একজন তার নিকট থেকে ৩শ টাকা ঘুস নেন। ইন্টারনেট চার্জ বাবাদ বিকাশে আরও ২৩০ টাকা দাবি করা হয়।

উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আদমপুর গ্রামের আলী আহমেদ মৃধার ছেলে শানু মৃধা অভিযোগ করেন, তার ভোটার আইডি কার্ডে বাবার নামে ভুল ছিল। ভুল সংশোধনের জন্য তার কাছে নির্বাচন অফিস থেকে ৭ হাজার টাকা ঘুস দাবি করা হয়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসের একজনের সঙ্গে আলাপ হয়। হয়রানি হওয়ার শঙ্কা থাকায় ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না (তবে, তার অডিও রেকডিং যুগান্তরের কাছে সংরক্ষিত আছে)। তিনি বলেন, অফিসে কিছু অনিয়ম-দুর্নীতি ছিল। স্যার (অফিস প্রধান) বলেছে দেখেন এগুলো কমান। ভোটার করার দায়িত্বে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. রেদাউনুল হক। অফিসের অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, সেবাপ্রত্যাশীরা ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধনের জন্য ঘুরতে ঘুরতে যখন ক্লান্ত হন। তখন সামান্য কিছু টাকা নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য শনিবার ভোটার করার দায়িত্বে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. রেদাউনুল হকের নাম্বারে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে, রোববার সকালে দুই দফায় নির্বাচন অফিসে গেলে প্রথম দফায় মো. রেদাউনুল হক তার অফিস প্রধানের অনুপস্থিতিতে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। নির্বাচন কর্মকর্তা যুগান্তর প্রতিনিধিকে বলেন, আপনি আপনার কাছে অভিযোগকারীকে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। তারপর আমি ব্যবস্থা নেব। এর আগে শনিবার মুঠোফোনে অনিয়মের সঙ্গে নিজের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাসুদ হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, নতুন ভোটার করার জন্য টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের অফিসে কোনো টাকা-পয়সার লেনদেন হয় না। আমি এসেই এগুলো বন্ধ করে দিয়েছি। পাবলিককে অনেকবার বলেছি আপনারা ব্যাংকে টাকা জমা দেন। তারা অফিসে ফি জমা দিয়ে কাজ করতে চায়। আমি সবসময় জনগণকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। অনিয়মের সঙ্গে আমার কোনো যোগসূত্র নেই। কারও বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।