দুই ভাই মিলে যুবকের দুচোখ তুলে বাবার হাতে দেন

দুই ভাই মিলে যুবকের দুচোখ তুলে বাবার হাতে দেন

বরিশালের মুলাদীতে সিরাজুল ইসলাম ওরফে রিপন ব্যাপারী নামে এক যুবকের চোখ তুলে নেওয়ার ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আপন ২ ভাই রিপন ব্যাপারীর দুচোখ তুলে বাবার হাতে দেন।

সোমবার দুপুরে রিপন ব্যাপারীর স্ত্রী রোকসানা বেগম বাদী হয়ে বরিশাল মহানগর জজ আদালতে এ মামলা করেন।

এতে রিপন ব্যাপারীর ভাই স্বপন ব্যাপারী, রোকন ব্যাপারী, বাবা আশেদ ব্যাপারীসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মুলাদী থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী নাজিম উদ্দীন পান্না।

এর আগে গত শুক্রবার (২২ অগাস্ট) বাবার নির্দেশে রিপন ব্যাপারীর দুই ভাই স্বপন ও রোকন ব্যাপারী মিলে তার দুই চোখ তুলে নেয়। ঘটনার ৩ দিন পরে রিপনের স্ত্রী রোকসানা আদালতে মামলাটি করেন। রিপন ব্যাপারী মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতেন বলে জানান স্ত্রী রোকসানা।

রোকসানা বেগম বলেন, তার স্বামী রিপন ব্যাপারী বিভিন্ন সময়ে চুরি, ছিনতাই ও প্রতারণা করে টাকা ও স্বর্ণালংকার সংগ্রহ করতেন। এসব টাকা ও স্বর্ণ নিরাপদে রাখতে তার মেজো ভাই রোকন ব্যাপারীর কাছে গচ্ছিত রাখেন। রোকন ব্যাপারী ওই টাকা দিয়ে তার দুই ছেলেকে বিদেশেও পাঠায় এবং জায়গা জমি ক্রয় করেছেন। প্রায় ৩ মাস আগে রিপন ব্যাপারী তার ভাইয়ের কাছে গচ্ছিত টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চান। ওই সময় রোকন ব্যাপারী ফেরত দিতে অস্বীকার করলে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে কয়েকবার এলাকায় সালিশ বৈঠকও হয়েছে।

রোকসানা আরও জানান, রিপন চুরি ছিনতাই করতে গিয়ে কারাগারে ছিলেন, মানুষের মারধরের শিকার হয়েছেন। তার গচ্ছিত প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩৫ লাখ টাকা রোকন ব্যাপারী আত্মসাৎ করতে চাইছিলেন। গত শুক্রবার বিকালে রিপন ঢাকা থেকে বাড়িতে গিয়ে রোকন ব্যাপারীর কাছে টাকা চান। কিন্তু তিনি টাকা দেবেন না জানালে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

রাত ১১টার দিকে রিপন বাড়ি ফিরলে আবার তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তার বাবা আশেদ ব্যাপারী ক্ষিপ্ত হয়ে রিপনকে মারধর করে চোখ উপড়ে ফেলার নির্দেশ দেন। বাবার নির্দেশ পেয়ে রোকন ও স্বপন সহযোগীদের নিয়ে রিপনকে মারধর করে এবং দুই চোখ তুলে তার বাবার হাতে দেন।

ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আহত রিপনকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

মুলাদী থানার এসআই মো. মাসুদ বলেন, দুই ভাই মিলে আরেক ভাইয়ের চোখ তুলে নেওয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় মামলা করেননি। তারা আদালতে মামলা করেছেন বলে শুনেছি। আদালতের আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।