বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ঘোষণা
বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের জায়গায় পার্কিং চেয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। এতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অপ্রতুলতার কারণে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সনির্ভর বেশিরভাগ রোগী পড়েছেন দুর্ভোগে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে বরিশাল অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের আওতাধীন ১০৮টি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ করে দিয়েছেন তারা।
এর আগে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার আন্দোলনের মুখে রোগীদের জিম্মি করে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগে সম্প্রতি হাসপাতাল চত্বর থেকে উৎখাত করা হয় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স। সেইসঙ্গে হাসপাতালের সরকারি ৭টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুতের পাশাপাশি জরুরি হটলাইন চালু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে পার্কিং ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, হাসপাতাল পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরের স্মারকলিপি দিয়েছেন চালকরা। ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন তারা। ৪৮ ঘণ্টা পরও দাবি আদায় না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। দ্রুত দাবি আদায় না হলে বরিশাল বিভাগজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা।
বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিক আজিজুর রহমান বলেন, প্রায় ২০০ জন মালিকের সমন্বয়ে ১০৮টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে এই সমিতির আওতায়। এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই, যে যত কম ভাড়ায় সেবা দিতে পারে তার চাহিদা তত বেশি থাকে। আমাদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে আগের পরিচালক শেবাচিম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স পার্কিংয়ের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করে সে জায়গা গাড়ি পার্কিংয়ের উপযোগী করে তোলেন অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা। কিছুদিন আগে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স রাখা যাবে না বলে হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক জানিয়ে দিয়েছেন। এতে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তেমনি রোগীরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি ফিরোজ আলম বলেন, পরিচালকের ওই আদেশের পর বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স আর হাসপাতালের ভেতরে পার্কিং করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বাইরে অনিরাপদ জায়গায় পার্কিং করার কারণে অনেক গাড়ির ব্যাটারিসহ যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান শেবাচিম হাসপাতালের রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি, হাসপাতালের ভেতরে নির্ধারিত পার্কিং স্থান আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
এদিকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অপ্রতুলতার কারণে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সনির্ভর বেশিরভাগ রোগী পড়েছেন দুর্ভোগে। ভোলা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রোগী নিয়ে যেতে চাওয়া স্বজন রবিউল বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে না, তার ওপর বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ধর্মঘট চলছে। এ অবস্থায় ঢাকা শিশু হাসপাতালে রোগী নিয়ে কীভাবে যাব, কোনো উপায় পাচ্ছি না।