রূপালী ইলিশের সন্ধানে তারা

রূপালী ইলিশের সন্ধানে তারা

রূপালী ইলিশের খোঁজে গভীর সমুদ্রে নেমেছেন উপকূলের হাজার হাজার জেলে। সপ্তাহজুড়ে চলা বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব কাটে রোববার বিকালে। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অন্তত পাঁচ হাজার মাছ ধরার ট্রলার সমুদ্রে গেছে। জেলেদের আশা, এবার ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিলবে।

৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে উত্তাল সমুদ্র ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ ইলিশ পাননি জেলেরা। এতে হতাশা নেমে আসে উপকূলের হাজারও মৎস্যজীবীর মাঝে।

জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট থেকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে। প্রচণ্ড ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারগুলো উপকূলের নদ-নদীতে আশ্রয় নেয়। আলীপুর-মহিপুর মৎস্যবন্দরের খাপড়াভাঙ্গা নদীতে দেশের বিভিন্ন এলাকার হাজারও ট্রলার নিরাপদে ছিল। সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় অলস সময় কাটানোর পর সোমবার সকাল থেকে ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরতে রওনা হয়। তবে প্রশাসনের কড়া নজরদারির কারণে ট্রলিং ট্রলারগুলো যেতে পারেনি। এর মধ্যে কয়েকটি ট্রলার লম্বা জাল ও নিষিদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে সমুদ্রে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে। তবে ২৮ আগস্ট লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সমুদ্রে রওনা হওয়ার সময় এফবি তামান্না ট্রলারের মাঝি ইউনুচ মিয়া যুগান্তরকে বলেন, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার পরও বৈরী আবহাওয়ায় মাছ ধরতে পারিনি। ঘাটে অলস সময় কাটিয়ে আবার যাচ্ছি। মাছ পেলে ভালো, না পেলে জেলেদের ধরে রাখাই কঠিন হবে।

বৈরী আবহাওয়ার সময় কয়েকটি ট্রলার ডুবে যায়। বেশিরভাগ জেলে জীবিত উদ্ধার হলেও কয়েকজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজনের মরদেহ ভেসে আসে কুয়াকাটার সৈকতে। এখনো দুই জেলে নিখোঁজ, পরিবার লাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

ট্রলারের মাঝি একলাছ গাজী যুগান্তরকে বলেন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কারণে আমরা ট্রলিং ট্রলার সমুদ্রে পাঠাতে পারছি না। তবে কয়েকটি ট্রলার লম্বা জাল নিয়ে গেছে।

ট্রলার মালিক আবুল কাশেম জানান, প্রায় সপ্তাহখানেক ঘাটে থাকার পর সোমবার সকাল থেকে ট্রলার সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। ভালো মাছ ধরার আশা করছেন তিনি।

কলাপাড়া উপজেলা ফিশিং ট্রলার মাঝি সমবায় সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন মাঝি বলেন, উপকূলের সব ট্রলারই এখন সমুদ্রে গেছে। আশা করছি ইলিশ ধরতে পারবে।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা যুগান্তরকে বলেন, টানা বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা এতদিন সমুদ্রে যেতে পারেনি। এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তারা গভীর সমুদ্রে গেছে। আশা করা যায় জেলেরা ভালো ইলিশ পাবেন।