লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পল্লী বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে শাকিব আহমেদ (২১) নামের এক ছাত্রদল নেতা এবং একই সময়ে বিদ্যালয়ের মাঠে পড়ে থাকা বিদ্যুতের ছেড়া তারে স্পর্শ লেগে সোহাগ হোসেন (১০) নামের স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছেন। শিশু নিহতের ঘটনায় শিক্ষকদের ও পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের গাফিলতিতে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউপির ১নাম্বার ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতার বাড়িতে এবং ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের বংশী ব্রিজ এলাকায় চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের রাতেই তাদের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
নিহত শাকিব আহমেদ উত্তর চরবংশী ইউপির ১নাম্বার ওয়ার্ডের ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়পুর রুস্তম আলি ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ও সালাহ উদ্দিন মিয়ার ছেলে। নিহত শিশু সোহাগ হোসেন একই ইউপির ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের বংশী ব্রিজ এলাকায় দিনমজুর মো. সফিক হোসেনের ছেলে ও চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, বংশী ব্রিজ এলাকায় বিদ্যুৎ লাইনটি রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ইউপির আকনবাজারের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২-এর জোনাল অফিসের আওতাধীন। এই এলাকা দিয়ে এর আগে ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে। দুপুর ১২টায় বিদ্যুত লাইনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পড়ে ছিলো। টিফিনের সময় খেলা করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই শিশু সোহাগ আহত হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ রায়পুর জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোশারফ হোসেন বলেন, বিদ্যুতের লাইনটি যে বৃষ্টির সময় স্কুলের মাঠে ছিড়ে পড়ে আছে তা প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্য শিক্ষকরাও আমাদেরকে জানাননি। তাদের অসাবধানতার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখানে আমাদের কোনও গাফিলতি ছিল না।
রায়পুরের উত্তর চরবংশী ইউপি সদস্য মোঃ ইউসুফ হোসেন বলেন, চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বৃষ্টির মধ্যে সারাদিন হাইভোল্ডের তার ছিড়ে পড়ে ছিলো। বিষয়টি গ্রামের লোক পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানিয়েছিলো। কিন্তু তারা তেমন গুরুত্ব দেয়নি। এ কারণে অসহায় পরিবারের শিশু ছাত্রটির এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিজেদের বসতঘরে বিদ্যুতের লাইন মেরামত করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা শাকিবের মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে রায়পুরা থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পৃথক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহতদের পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের আপত্তিতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে আনতে পারিনি। এ বিষয়ে কেউ কোনও অভিযোগও করেনি।