মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া ঝরনায় অটোরিকশাচালকদের মারধরের শিকার পর্যটকেরা
নোয়াখালী থেকে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনায় বাস ভাড়া করে বেড়াতে এসেছিলেন ২৫ থেকে ৩০ জন পর্যটক। মহাসড়ক থেকে দুই কিলোমিটার দূরের ঝরনায় সরাসরি বাসে চড়ে যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বাদ সাধেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। মহাসড়কের ওই অংশ থেকে ঝরনা পর্যন্ত শুধুই অটোরিকশা চলবে বলে জানিয়ে দেন তাঁরা। পর্যটকদের ঝরনায় যেতে হলে অটোরিকশায় কিংবা হেঁটে যেতে হবে। এমনটা মানতে রাজি না হওয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা বেধে যায়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এতে বেশ কয়েকজন পর্যটক আহত হন। মারধরের শিকার হয়েছেন অটোরিকশার চালকেরা। শেষে ঝরনা না দেখেই ফিরে যান ওই পর্যটকেরা।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা রাস্তার মাথায় আজ বুধবার বেলা ১১টায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ পর্যটকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পরে পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ থেকে খৈয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে আসা পর্যটকেরা ঝরনার রাস্তায় বাস নিয়ে ঢুকে পড়েন। এ সময় অটোরিকশার চালকেরা বাসটি থামিয়ে দেন এবং সড়কটিতে বাস চালানো যাবে না বলে জানিয়ে দেন। এতে উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা থেকে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন কিছুটা আহত হয়েছেন।
আহত পর্যটকদের মধ্যে বিপ্লব নামের একজন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা গাড়ি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে খৈয়াছড়া ঝরনা রাস্তায় প্রবেশ করার সময় স্থানীয় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা আমাদের যেতে বাধা দেন। বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাঁরা আমাদের ওপর চড়াও হন। মারধরে আমাদের সঙ্গে আসা হাসান, বিপ্লব, সাকিব, মো. হাসান, সিয়ামসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এমন ঘটনায় আমরা আর ঝরনায় না গিয়ে বাসে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তবে পর্যটকদের অভিযোগ অস্বীকার করেন ঝরনার রাস্তায় চলাচলকারী অটোরিকশার চালকেরা। চালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা পর্যটকদের বলেছিলাম, এত ছোট রাস্তায় বড় বাস প্রবেশ করানো যাবে না। সড়কটি ছোট হওয়ায় অন্য পর্যটকদের বাসও সব সময় মহাসড়কে থাকে। এখান থেকে সিএনজি, রিকশা অথবা হেঁটে ঝরনা দেখতে যেতে হয়। তাঁরা সেটা মানতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তাঁরা ১০ থেকে ১২ জন মিলে আমাদের ওপর চড়াও হন। এতে আমাদের হোরা মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, ফখরুল, পাভেল, কামরুল, আরমানসহ কয়েকজন আহত হন। প্রথমে পর্যটকেরা আমাদের লোকজনকে মারধর করেছেন।’
এ বিষয়ে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পর্যটকদের বাস খৈয়াছড়া ঝরনার সড়কে ঢোকার সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও টুকটাক ধাক্কাধাক্কি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এই ঘটনা সেখানেই মীমাংসা হয়ে গেছে।’