চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের ওয়াকিটকিতে দেওয়া বক্তব্য ফাঁস করার অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে খুলশী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত পুলিশ কনস্টেবল অমি দাশ চট্টগ্রামের পটিয়ার রাজিব দাশের ছেলে। তিনি পুলিশের টেলিকম ইউনিটের কনস্টেবল। তিনি খুলশী থানায় কর্মরত।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, গত তিন দিন আগে সিএমপি কমিশনারের একটি ওয়ারলেস বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সে বার্তায় অস্ত্রধারীদের গুলির নির্দেশ দেন হাসিব আজিজ। নিজেদের এমন গোপনীয় বার্তা বাইরে চলে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে সিএমপি। রোববার (১৭ আগস্ট) সিএমপির সংশ্লিষ্ট সূত্র কালবেলাকে জানিয়েছিল, এ বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াকারীকে খুঁজতে মাঠে নেমেছেন একাধিক কর্মকর্তা। ধারণা করা হচ্ছে, সিএমপির কেউ এ কাজটি করেছেন।
সিএমপি সূত্র বলছে, ওয়্যারলেস বার্তা ফাঁস করা নতুন নয়। এর আগে সম্প্রতি একবার ওয়্যারলেস বার্তা ফাঁস হয়েছিল। সবশেষ বার্তাটি মূলত পুলিশ সদস্যদের পক্ষে। তাও এটি জনসম্মুখে যাওয়াটা নেগেটিভ মেসেজ। এ ঘটনার পর সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়্যারলেসে স্পর্শকাতর কোনো বার্তা দিতে সাহস করছেন না।
নগরের বন্দর থানাধীন ঈশান মিস্ত্রির ঘাট এলাকায় গত সোমবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে বন্দর থানার এক কর্মকর্তা গুরুতর আহত হওয়ার পর ওয়্যারলেসে অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশের বার্তা দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ। পরে তার এই বার্তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কমিশনারের এই বার্তা ফাঁস হওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন চট্টগ্রাম নগরের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা। নিজেদের গোপনীয় এমন বার্তা বাইরে চলে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছেন তারা। তাদের মতে, এই বার্তা ফাঁস করেছে সিএমপির কোনো কর্মকর্তা। হয়তো কমিশনারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়তে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে কেউ।
একাধিক সূত্র জানায়, ভিডিওটি প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এমন কড়া বার্তা পেয়ে উজ্জীবিত পুলিশ সদস্যরা। তবে আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এভাবে নিজেদের সেনসিটিভ বার্তা বাইরে যাওয়া। এভাবে হলে কাজ করাটা একটু জটিল হয়ে যাচ্ছে। সিএমপির কেউ এ কাজ করেছেন।
ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কোনো একটি ভবনের ভেতর থেকে ভিডিওটি রেকর্ড করা হয়েছে। ৩ মিনিটের ৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে একজনকে হাতে ওয়াকিটকি ধরে রাখতে দেখা যায়।
সিএমপি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে ভিডিও ধারণকারীকে শনাক্ত করতে কাজ শুরু হয়েছে। নানা অ্যাঙ্গেলে নানা সমীকরণও মিলিয়ে ভিডিওতে টাইলস মোড়ানো ফ্লোরটি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে সিএমপির কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারা কালবেলাকে বলেন, এটি পুলিশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে মন্তব্য করতে পারছি না। তবে এ বিষয় কাজ চলমান রয়েছে।