সন্দ্বীপে মাথায় তুলে আছাড় মেরে শিশুকে হত্যা, অভিযুক্তের ঘরে আগুন
দুই পরিবারের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল। আর এর জের ধরে মাথায় তুলে আছাড় মেরে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে দশটায় সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিশুর নাম মোহাম্মদ আলী। সে স্থানীয় অটোরিকশাচালক আবু তাহেরের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ইতালিপ্রবাসী এক ব্যক্তি শিশু মোহাম্মদ আলীকে দুই দফায় মাথায় তুলে আছাড় মারেন। এতে সে অচেতন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুটির মৃত্যুর খবর সন্দ্বীপে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জাহাঙ্গীরের বসতঘর ভাঙচুর করে আসবাবে আগুন দেয়।
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা তাঁর জানা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিশুটির বাবা অটোরিকশাচালক আবু তাহের ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সম্প্রতি ইতালিপ্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে আবু তাহেরের পরিবারের সদস্যদের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে জাহাঙ্গীর আলম শিশুটিকে আঘাত করেন। সে স্থানীয় একটি নুরানি মাদ্রাসার শিশু শ্রেণিতে পড়ত।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকালে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে ফিরে এলে তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করার ভান করেন জাহাঙ্গীর। এরপর হঠাৎ মাথায় তুলে নিয়ে দুবার আছড়ে ফেলেন।
এদিকে চট্টগ্রামে শিশু মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়েছে—এমন খবর এলাকায় পৌঁছানোর পর এলাকাবাসীর ভেতরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা জাহাঙ্গীর আলমের বসতঘরে হামলা চালান। ঘর থেকে আসবাব বাইরে জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেন। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, নিহত মোহাম্মদ আলী আবু তাহেরের পাঁচ সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে। তার মৃত্যুতে আহাজারি করছেন স্বজনেরা। একটি শিশুকে কেউ ঠান্ডা মাথায় এভাবে খুন করতে পারে, তা ভাবতে পারছে না এলাকার মানুষ।