দক্ষিণ আফ্রিকায় মারা যাওয়া কাজী মহিউদ্দিন পলাশ।

ফ্রিজে মিলল বাংলাদেশির লাশ

দক্ষিণ আফ্রিকার পুমালাঙ্গা প্রভিন্সের উইটব্যাংক এলাকায় কাজী মহিউদ্দিন পলাশ নামে এক বাংলাদেশির লাশ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত মহিউদ্দিন নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার গাবুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করে আসছিলেন। দেশে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। চলতি সর্বশেষ জানুয়ারিতে দেশে গিয়ে আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে আসেন।

নিহত কাজী মহিউদ্দিন পলাশ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামের কাজী আইয়ুব আলী মাস্টার বাড়ির কাজী আমিন উল্লার ছেলে। আট ভাই বোনের মধ্যে পলাশ ছিলেন ষষ্ঠ।

পলাশের বড় ভাই কাজী সালে উদ্দিন মাসুম জানান, জীবিকার তাগিদে ২০১২ সালে আফ্রিকা যায় পলাশ। পরে আফ্রিকার উইটব্যাংক এলাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করে। টানা প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় পর দেশে এসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় পলাশ। সবশেষ গত এক বছর আগে দেশে এসে ছুটি কাটিয়ে পুনরায় আফ্রিকা চলে যায় সে। তার তিন বছর ও এক বছর বয়সী দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

তিনি আরও জানান, পলাশ দক্ষিণ আফ্রিকার সন্ত্রাসীদের ঝামেলা এড়াতে ওই দেশি এক যুবককে তার দোকানে চাকরি দেয়। গত কয়েক বছর ধরে ভালই চলছিল পলাশের ব্যবসা। হঠাৎ করে গত তিন দিন আগে দোকান থেকে নিখোঁজ হয় পলাশ। পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ীরা সম্ভাব্য জায়গায় পলাশকে খোঁজে। বিষয়টি তারা আমাদেরকে বাড়িতেও জানিয়েছিলো। এলাকার লোকজনের মাধ্যমে আমরাও তার খোঁজখবর নিয়ে কোন সন্ধান পাইনি। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে একজন ব্যবসায়ী আমাদের জানায় পলাশের দোকানের ডিপ ফ্রিজের মধ্যে তার লাশ পাওয়া গেছে। দোকানে চাকরি করা আফ্রিকান ওই ছেলেসহ সন্ত্রাসীরা পলাশকে হত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। পলাশের লাশ দ্রুত দেশে আনতে পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

জানা যায়, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে দোকান বন্ধের পর থেকে মহিউদ্দিনের দোকান বুধবারেও খোলা হয়নি। তার দোকানের সামনে সাটার সহ তালা ঝুলানো ছিলো। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দোকানের পেছনের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা প্রথমে ভেতরে গিয়ে কোথাও তাকে পাওয়া যায় নি। পুলিশ এসে ফ্রিজে তল্লাশি চালিয়ে সেখানে আইস প্যাকেটের নিচে মহিউদ্দিনের লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশ তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায়।

স্থানীয় ব্যবসায়ী বাংলাদেশি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, পুলিশ এসে পলাশের লাশ উদ্ধার করে। তখন তার গলায় প্লাস্টিক মুড়ানো আর মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এসময় ফ্রিজের পাশে পাঁচ কেজি ওজনের বড় একটি হাতুড়ি পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, মহিউদ্দিনের দোকানের মালাউয়ি কর্মচারী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়েছে। তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।