বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আগামী দিনেও আমাদের ওপর অনেক নির্যাতন আসতে পারে; কিন্তু নির্যাতন আসলেও মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের নেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের নেতা তারেক রহমান কোনো অবস্থাতেই আপস করেন নাই। আর আপস কী জিনিস বিএনপি তা জানে না। বিএনপি জানে কিভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে হয়।
ফ্যাসিবাদের পতন ও ছাত্র-জনতার বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বুধবার দুপুরে কুমিল্লায় বিজয় র্যালি উদ্বোধন শেষে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি ভালো করেই জানে কিভাবে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হয়। রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার থেকে প্রধানমন্ত্রী অর্থাৎ পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি দিয়েছিলেন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করেছিল বিএনপি। অর্থাৎ বিএনপি সব সময় সংস্কারের পক্ষে ছিল।
তিনি আরও বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে কিভাবে গ্রহণ করতে হয়, বাস্তবায়ন করতে হয়, জনগণের মনের ভাষা বুঝতে পেরে বিএনপি সব সময় সে সমস্ত সংস্কারমূলক কর্মসূচি অনেক আগেই ঘোষণা করেছে। যার জন্যই একত্রিশ দফা এসেছে, মিশন ২০৩০ থেকে, ২৭ দফা রাষ্ট্র বনাম কর্মসূচি থেকে। কাজেই বিএনপি সব সময় একটি আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে অগ্রগামী ছিল এবং বিএনপি আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য সব সময় জনগণকে পাশে নিয়ে সামনের দিকে তাকায় অর্থাৎ আজকে আপনারা যা চিন্তা করেন বিএনপি তা ১০ থেকে ১৫ দিন আগেই চিন্তা করে। বিএনপি সব সময় অগ্রবর্তী এবং আগামীর বাংলাদেশ সুন্দর গড়ার জন্য আমাদের আমাদের নেতা তারেক রহমান একত্রিশ দফার ঘোষণা দিয়েছেন, আমাদের তো ঘোষণা দেওয়া হয়ে গেছে।
ডা. জাহিদ বলেন, আপনারা যারা বিএনপিকে নিয়ে আলোচনা করেন আপনাদের অনুরোধ করব আসুন রাজনীতির মাঠে আসুন। আপনার কর্মসূচি তুলে ধরুন। আমাদের একত্রিশ দফা আছে আপনাদের যা আছে নিয়ে জনগণের পাশে আসেন। জনগণ জনরায়ের প্রতি বিশ্বাস রাখুন আস্থা রাখুন। মনে রাখবেন শেষ বিচারে জনগণ সঠিক রায় দিবে। জনগণ কখনো ষড়যন্ত্রের কাছে পরাজিত হয় না।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের কাছে লুণ্ঠন করা অর্থ আছে, অস্ত্র আছে। আমাদের দুটো খালি হাত আছে। তা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। ১৬ বছর বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম খুন হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কারাগারে ও আদালতের বারান্দায় তাদের সময় কেটেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময় গুম হওয়া বিএনপি নেতা হিরু ও হুমায়ুনকে ফেরতের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের অনৈক্যের কারণে পলাতক স্বৈরাচার যাতে পুনরায় আবার কোন ফাঁকফোকর দিয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেই লক্ষ্যে কুমিল্লার সব মানুষকে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে স্বৈরাচার আপনার আমার পাশে থেকে আপনাকে আমাকে প্রলোভিত করতে পারে। কোনো প্ররোচনায় শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা তারেক রহমান খালেদা জিয়ার সৈনিকেরা ইনশাআল্লাহ পা দিবে না।
এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন হাজী আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন। সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন।
পরে বিজয় র্যালিটি নগরীর কান্দিরপাড় দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নির্বাহী কমিটি, বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিনুর রশীদ ইয়াছিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারি আবু, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রেজবীউল আহসান মুন্সীসহ কুমিল্লা মহানগর, দক্ষিণ জেলা এবং উত্তর জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।