ছবি: যুগান্তর

‘কাজ করে খামু, ভিক্ষা করুম না’

অভাব-অনটনের কারণে ভিক্ষা করে সংসার চালিয়েছেন বাকপ্রতিবন্ধি ও ভূমিহীন সজল আলী। তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ভিক্ষা করে তাকে গ্রামের একটি মাদ্রাসায় পড়ান সজল। ভিক্ষার উপার্জন দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তার।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মানিকগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে তাকে পুর্নবাসন করে কর্মসংস্থানের জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দেওয়া হয়েছে।

সজল আলী সিংগাই উপজেলার দক্ষিণ চারিগ্রাম গ্রামের উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে। তিনি তার পরিবারসহ সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করেন।

সজলের বাবা উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আমাদের জায়গা জমি নেই। আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করি। আমার ছেলে ও একটি মেয়ে প্রতিবন্ধি। ছেলে ভিক্ষা করে আমাদের সংসারের সহযোগিতা করছে। আমার ছেলেকে বিয়ে করিয়েছিলাম। ছেলে প্রতিবন্ধি হওয়ায় বউ চলে গেছে। সজলের ৬ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তাকে মাদ্রাসায় পড়াই।

তিনি বলেন, সরকার আমার ছেলেকে একটি রিকশা কিনে দিয়েছে। আমার ছেলে এখন আর ভিক্ষা করবে না। আমি বাবা হিসেবে এখন গর্ব করে বলতে পারব, আমার ছেলে এখন রিকশা চালায়।

সজল বলেন, এখন কাজ করে খামু, আমি আর ভিক্ষা করুম না। আমাকে সমাজসেবা থেকে রিকশা কিনে দিয়েছে। এখন রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করব।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ভিক্ষুক রয়েছে ১৪৯ জন। এরমধ্যে থেকে ৭ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। যেমন- সজল আলীকে রিকশা কেনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদের মুদি দোকান করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা সমাজসেবা উপ-পরিচালক আব্দুল বাতেন বলেন, সরকারি নির্দেশনায় ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে সিংগাইর উপজেলার ৭ জন ভিক্ষুককে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, সমাজে কেউ যেন অবহেলিত না থাকে সেই লক্ষে ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। কাউকে যেন ভিক্ষাবৃত্তি করে না চলতে হয় সেই লক্ষে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতার মাধ্যমে পাশে দাঁড়ানো উচিত।