পাইলস রোগীর পিত্তথলির অপারেশন, পালিয়েছেন চিকিৎসক-নার্স

পাইলস রোগীর পিত্তথলির অপারেশন, পালিয়েছেন চিকিৎসক-নার্স

গলব্লাডারে পাথরে আক্রান্ত এক রোগীর স্থলে পাইলস আক্রান্ত অন্য নারীকে অপারেশন করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অপারেশন করা চিকিৎসক এবং নার্স হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান।

সোমবার রাতে ফরিদপুর শহরের সৌদি-বাংলা (প্রাইভেট) হাসপাতালে হ্যাপি নামের এক মহিলার পাইলস অপারেশন না করে পিত্তথলির অপারেশন করায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য প্রশাসন ও ছাত্র নেতারা হাসপাতালের সামনে হাজির হন। এরপর রোগীকে হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কোনো ডাক্তার ও নার্স উপস্থিত না থাকায় সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালটি তালা মেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের সরিয়ে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জনের উদ্যোগে মঙ্গলবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

রোগীর স্বজনেরা জানান, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সলেনামা গ্রাম হতে হ্যাপি আক্তার (৩৬) নামের এক রোগী পাইলস অপারেশনের জন্য সোমবার দুপুরে শহরের সৌদি বাংলা (প্রাঃ) হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ভর্তি ছিলেন।

সোমবার বিকালের দিকে তড়িঘড়ি করে হ্যাপি আক্তারকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় রোগীর অন্য স্বজন এসে রোগীকে বেডে না দেখে সন্দেহ হয়। কারণ যেই ডাক্তার পাইলস অপারেশন করবেন তিনি হাসপাতালে তখনও এসে পৌঁছাননি। তাহলে কে করবে তার অপারেশন। আর যেই রোগী পিত্তথলির অপারেশন হবেন তিনি চতুর্থ তলার বেডেই শুয়ে ছিলেন। সেই সময় হ্যাপি আক্তারের স্বজনরা চিৎকার করলে হাসপাতালে লোকজন ভিড় জমান। জটলার ফাঁকে অপারেশনে নিয়োজিত ডাক্তার ও কর্তব্যরত নার্স হাসপাতাল ছেড়ে সটকে পড়েন।

স্থানীয়রা জানান, ফরিদপুর ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি) ডা. মো. নজরুল ইসলাম অপারেশন করেন হ্যাপি আক্তারের। ফরিদপুরে সৌদি বাংলা হাসপাতালের ডাক্তার নজরুল ইসলাম পাইলস রোগী হ্যাপিকে (৩৬) পিত্তথলির রোগী ভেবে ভুল চিকিৎসা দেন। বর্তমানে হ্যাপি আক্তার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

চিকিৎসক মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, সরেজমিন এসে জানতে পেরেছি এক রোগীর চিকিৎসা অন্য রোগীকে দেওয়া হয়েছে। আমরা একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মাঝে হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।