হাত-পা বেঁধে ঝোপের মধ্যে ফেলে বন্ধুর জন্মদিন পালন

হাত-পা বেঁধে ঝোপের মধ্যে ফেলে বন্ধুর জন্মদিন পালন

ঢাকার ধামরাইয়ে বন্ধুর জন্মদিনে হাত-পা বেঁধে পৌরশহরের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে এক ঝোপের ভেতর ফেলে দিয়ে জন্মদিন উদযাপন করেছে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্ররা। পরে পথচারীদের নজরে এলে স্কুলছাত্রকে ঝোপ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে ধামরাই পৌরশহরের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিন মডেল টাউনের পাশের ঝোপে ফেলে বন্ধু ওবাইদুরের জন্মদিন পালন করেন তারা।

ওবাইদুর ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। বন্ধুরা তার জন্মদিন উপলক্ষে এমন অদ্ভুত উদযাপন করে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এমন ঘটনার পর অভিভাবক ও স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাদের মতে, জন্মদিন উদযাপন আনন্দের হলেও এভাবে বন্ধুর হাত-পা বেঁধে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করা শিক্ষার্থীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। শিক্ষকদের আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ফাইজু জানান, প্রথমে ছাত্রটির হাত বাঁধা হয় এবং তাকে ঝোপের ভেতর মাটিতে ফেলে রাখা হয়। এরপর মাথায় ডিম ফাটানো হয়। এরপর তারা টিম আটা ঢেলে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে পথচারী লোকজনসহ আমরা গিয়ে ওই স্কুলছাত্রের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেই। এরপর ছাত্রদের নাম-পরিচয় জানতে চাইলেও স্কুলছাত্র ওবাইদুর তা প্রকাশ করেনি। এভাবে হাত বেঁধে ঝোপে ফেলে রাখা কোনোভাবেই নিরাপদ নয়, এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থী মো. ওবাইদুর বলেন, আজকে আমার জন্মদিন সেই কারণে বন্ধুরা মিলে আমাকে হাত-পা বেঁধে মাথায় ডিম ভেঙে আটা দিয়ে ঝোপে ফেলে দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জুলেখা বেগম বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি ঘটনাটি জেনেছি। শিক্ষার্থীরা যদি এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে, তবে তা উদ্বেগজনক। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামনুন আহমেদ অনীক জানান, বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। আমরা এ ঘটনার তদন্ত করছি এবং ভবিষ্যতে এমন ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।