শুটিং ইউনিটের দুর্ঘটনায় কেটে ফেলতে হয়েছে লাইটম্যান সহকারী রবিনের হাতছবি: কোলাজ

হাসপাতালে রবিনদের খোঁজ নেয়নি সংগঠনগুলো

৫ সেপ্টেম্বর ইউটিউব চ্যানেল প্রাঙ্ক কিংয়ের একটি নাটকের শুটিংয়ে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন গুরুতর আহত হন। দুজন কিছুটা সুস্থ হলেও এখনো তিনজন আছেন হাসপাতালে। এর মাঝে লাইটম্যান সহকারী রবিন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে, জেনারেটর অপারেটর আবদুর রাজ্জাক ঢাকা মেডিকেল কলেজে ও লাইটম্যান সহকারী হৃদয় জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো তাঁদের খোঁজ নেয়নি ছোট পর্দা ও চলচ্চিত্রের বড় কোনো সংগঠন।

ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে যাওয়ার সময় লাইট ও জেনারেটরবাহী একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। শুটিংয়ের জন্য আলাদা গাড়ি থাকলেও ইউনিটের কয়েকজনকে তাতে না পাঠিয়ে জেনারেটরের পিকআপে পাঠাতে বাধ্য করা হয়। গত সোমবার বিকেলে লাইটম্যান সহাকারী রবিনের একটি হাত কেটে ফেলা হয়। একটি পা-ও ঝুঁকিতে রয়েছে। জেনারেটর অপারেটর আবদুর রাজ্জাকের ঘাড় ও বুকের বেশ কয়েকটি হাড় ভেঙেছে। তিনি আর দাঁড়াতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লাইটম্যান সহকারী হৃদয়ও চোয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, পড়ে গেছে তাঁর পাঁচটি দাঁত।
এ ঘটনার পর ফেসবুকে পোস্ট দিলেও হাসপাতাল কিংবা ফোনকলে তাঁদের কোনো খোঁজ না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয়শিল্পী সংঘ ও ছোট পর্দার প্রযোজকদের সংগঠন টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) বিরুদ্ধে।

হাসপাতালে সব খোঁজখবর রাখছেন চলচ্চিত্র টেলিভিশন ও ডিজিটাল মিডিয়া পেশাদার মৈত্রী কনফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত আটটি সংগঠন। এর মহাসচিব আবু জাফর প্রথম আলোকে জানান, বিভিন্ন সংগঠনকে ফোন কলে ঘটনার দিন সব জানানোর পরও কেউ আর খোঁজ নেয়নি। আবু জাফর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ডিরেক্টরস ডিল্ডের সহসভাপতি পদে ফিরোজ খান ভাই কল করে কে কোন হাসপাতালে আছেন, তা জানতে চেয়েছেন। এর বাইরে কোনো সংগঠন খবর নেয়নি।’
এদিকে রবিনসহ বাকিদের চিকিৎসার মানবিক আবেদন জানিয়েছে ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ। আজ ১২ তারিখের মধ্যে সব সদস্যকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ডিরেক্টরস গিল্ডের অর্থ সম্পাদক নির্মাতা আবু রায়হান জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ফান্ড কালেকশন করছি। শনিবার তাঁদের দেখতে যাব।’ অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মামুন অপুকে কল দিলে ও বার্তা পাঠালেও উত্তর আসেনি।

সংগঠনগুলো থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা না গেলেও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই রবিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নির্মাতা তপু খানের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা রবিনের চিকিৎসায় তুলে দিয়েছেন প্রযোজক আকবর হায়দার। আর কয়েকজন চিত্রগ্রাহকের উদ্যোগে ৫০ হাজার টাকা রবিনের চিকিৎসায় তুলে দেওয়া হয়। অভিনেতা রওনক হাসান, অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণসহ অনেকেই মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। অভিনেতা যাহের আলভী তাঁর এ মাসের শুটিংয়ের পারিশ্রমিক থেকে একটি অংশ রবিনের চিকিৎসায় তুলে দেবেন বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন।
এদিকে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা আসেনি প্রাঙ্ক কিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও নাট্যনির্মাতা আর্থিক সজীবের কাছ থেকে। গতকাল কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসলেও এর সুরাহা হয়নি।