মানবিক সহায়তার লাইনে গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনি

মানবিক সহায়তার লাইনে গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনি

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছেন ফিলিস্তিনের জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় সুলেমান ওবেইদ। বুধবার (৭ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ৪০ বছর বয়সী এই ফুটবলার গাজার অবরুদ্ধ এলাকায় চলমান সেনা অভিযানের মধ্যে মানবিক সহায়তা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক তখনই তিনি ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।

সুলেমান ওবেইদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফিলিস্তিনের ক্রীড়াঙ্গনে। জাতীয় পর্যায়ের এই ফুটবলারের জীবনাবসান কেবল দেশের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনের জন্যও এক বড় ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

দীর্ঘ প্রায় ২৩ মাস ধরে গাজায় চলমান সহিংসতায় এবারই প্রথম কোনো ক্রীড়াবিদ নিহত হলেন এমন নয়। শুধু গত মাসেই অন্তত ৩৯ জন ক্রীড়াবিদ, স্কাউট ও যুব সংগঠক নিহত হয়েছেন। সংঘাত শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনের ক্রীড়া ও যুব অঙ্গনের ৬৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে।

ক্যারিয়ারের শুরুতে ওবেইদ নিজ শহরের ক্লাব ‘শাবাব আল-শাতি’তে খেলা শুরু করেন। পরে তিনি ওয়েস্ট ব্যাংক প্রিমিয়ার লিগের দল ‘আল-আমারি ক্লাব’-এ যোগ দেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার প্রভাব ছিল স্পষ্ট। ২০১০ সালে ওয়েস্ট এশিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিপক্ষে ফিলিস্তিনের জার্সিতে প্রথম গোল করেন তিনি। এরপর ২০১২ সালের এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ ও ২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন।

এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনজুড়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। বেসামরিক নাগরিক ও ক্রীড়াবিদদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় নতুন করে আন্তর্জাতিক নজরদারির আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এদিকে, ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে এক ভিন্ন বার্তা দিয়েছে জার্মানির শীর্ষস্থানীয় ক্লাব ‘ফরচুনা ডুসেলডর্ফ’। ইসরায়েলি জাতীয় দলের খেলোয়াড় শোন ওয়েইসম্যানকে দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা বাতিল করেছে তারা। ওয়েইসম্যানের পূর্বের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া ইসরায়েলি সেনা অভিযানের পক্ষে পোস্টগুলো ঘিরে সমর্থকদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে এই সিদ্ধান্ত নেয় ক্লাবটি।

সুলেমান ওবেইদের শাহাদাত কেবল একটি প্রাণের অবসান নয়, বরং তা বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে চলমান সহিংসতা ও বৈষম্যের এক করুণ প্রতিচ্ছবি।

আরইউ