মেসির সামনে আরেকটি রেকর্ডের হাতছানিএএফপি

মাঠে না নেমেও কি সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারবেন মেসি

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য রেকর্ড ও অর্জন নিজের নামের পাশে যোগ করেছেন লিওনেল মেসি। একজন ফুটবলার হিসেবে সম্ভাব্য যেসব প্রধান শিরোপা জিততে পারতেন, সবই জিতেছেন। ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেই বলে দিয়েছেন, ফুটবলের কাছে তাঁর আর চাওয়ার কিছু নেই।

কিন্তু এরপরও ভক্ত-সমর্থকেরা মেসির ছোট-বড় সব অর্জনকে নিজেদের মতো করে উদ্‌যাপন করে চলেছেন। এবার তাঁদের চোখ আরেকটি রেকর্ডে, যেটি মেসি কখনোই নিজের করে নিতে পারেননি। আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা কখনোই সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব শেষ করতে পারেননি। এবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার শেষ ম্যাচে মাঠে না নেমেও রেকর্ডটি নিজের করে নিতে পারেন মেসি।

২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি—১২ ম্যাচে ৮ গোল করেছেন। মেসি যেহেতু আর্জেন্টিনার হয়ে বাছাইয়ের শেষ ম্যাচটি খেলবেন না, ফলে তাঁর পক্ষে গোলসংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ নেই। অন্যদিকে ৭ গোল নিয়ে মেসির ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন কলম্বিয়ান উইঙ্গার লুইস দিয়াজ।

আগামীকাল ভোরে কলম্বিয়া নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে। এই ম্যাচে ১ গোল করলেই মেসিকে ছুঁয়ে ফেলবেন দিয়াজ। জোড়া গোল করলে দিয়াজের পেছনে পড়বেন মেসি। তবে শেষ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার ডিফেন্ডাররা যদি দিয়াজকে ঠেকাতে পারেন, তবে প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হবেন মেসি। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সকালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে বাছাইপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। ৩৮ বছর বয়সী মেসিকে এ ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।

১৯৯৮ বিশ্বকাপ থেকে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্ব। এর পর থেকে প্রতিটি আসরেই আলাদা আলাদা গোলদাতা শীর্ষে থেকেছেন। কিন্তু মেসি কখনোই সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারেননি।

➣ ১৯৯৮ বিশ্বকাপ বাছাই: চিলির ইভান জামোরানো ১২ গোল নিয়ে শীর্ষে। তখনো পেশাদার ফুটবলে আগমন ঘটেনি মেসির।

➣ ২০০২ বিশ্বকাপ বাছাই: যুগ্মভাবে শীর্ষে ছিলেন আর্জেন্টিনার হারনান ক্রেসপো (৯) ও ইকুয়েডরের আগুস্তিন দেলগাদো (৯)।

➣ ২০০৬ বিশ্বকাপ বাছাই: ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো নাজারিও ১০ গোল নিয়ে শীর্ষে। মেসি তিন ম্যাচ খেলে গোল পাননি।

➣ ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাই: চিলির হুম্বের্তো সুয়াজো ১০ গোল নিয়ে শীর্ষে। মেসি ১৮ ম্যাচে গোল করেন ৪টি।

➣ ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাই: উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ ১১ গোল করে শীর্ষে। সেবার মেসি করেছিলেন ১০ গোল।

➣ ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাই: উরুগুয়ের এদিনসন কাভানি ১০ গোল করে শীর্ষে। মেসির গোল ৭।

➣ ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাই: দুর্দান্ত খেলার পরও মেসির গোল ৭টি। বলিভিয়ার মার্সেলো মার্টিনস ১০ গোল করে শীর্ষে।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের উত্তেজনা শেষ হওয়ার আগেই সামনে এসেছে মেসির ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার প্রসঙ্গ। এ বিষয়ে আবারও কথা বলতে হয়েছে আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি লিওর (মেসি) সঙ্গে বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো কথা বলিনি। আমি জানি সে কী বলেছে এবং শান্তভাবে সময় নিয়ে সে ভাবুক। ও যা-ই সিদ্ধান্ত নেবে, সেটিই আমাদের কাছে ঠিক।’

মেসির সাবেক সতীর্থ ও বন্ধু আনহেল দি মারিয়া অবশ্য তাঁকে বিশ্বকাপের পরও খেলতে দেখার ইচ্ছার কথা বলেছেন। দি মারিয়ার ভাষায়, ‘লিও (মেসি) এখনো অবসর নেয়নি। এটা কেবল শেষ বাছাইপর্বের ম্যাচ, তবে সামনে একটা বিশ্বকাপ আছে। আর নিশ্চিতভাবেই এরপরও সে আরও ম্যাচ খেলবে। আমার কাছে এটা বিদায় নয়। সে কারণেই আমি যাইনি। আমি ওর সঙ্গে কথা বলেছি। আমি খুশি যে ও এখনো আমাদের সঙ্গে আছে।’