ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র দোয়েল চত্বর, চারুকলার সামনে কিংবা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এলাকাগুলো শুধু শিক্ষার্থীদের আড্ডা বা সংস্কৃতিচর্চার স্থান নয়, বরং তরুণীদের কাছে কম দামে বৈচিত্র্যময় গয়না কেনার এক জনপ্রিয় ঠিকানাও। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফুটপাতজুড়ে সাজানো থাকে নানা রঙের পুঁতি, তামা, মাটি ও পাথরের গয়না, যার চোখ ধাঁধানো ডিজাইন মেয়েদের আকৃষ্ট করে।
দোয়েল চত্বর যেন বাঙালি ঐতিহ্যের এক শৌখিন রাজত্ব। ফুটপাত ধরে সারি দেওয়া টং দোকানঘর। সেখানে থরে থরে সাজিয়ে রাখা ঘর সাজানোর উপকরণসহ নানা শৌখিন জিনিসপত্র। আছে গয়না, পুতুল, কলমদানি, ফুলদানি, কানের দুল, মালা থেকে শুরু করে কাঠের তৈরি ছোট-বড় হরেক রকমের ঘর সাজানোর জিনিস, বিভিন্ন চিত্রাঙ্কনে বাঁধাই করে রাখা ফ্রেম। যে কোনো ছুটির দিনে জমে ওঠে দোয়েল চত্বরের পাশে হস্তশিল্প ও কারুশিল্পের দোকানগুলো। তবে শুক্রবার ক্রেতার সংখ্যা থাকে সব থেকে বেশি। রঙিন নকশার ঝলকানি যেন দূর থেকেই ক্রেতাদের টেনে আনে।
পুঁতি দিয়ে তৈরি রঙিন মালা, ঝুমকা কিংবা ব্রেসলেট এখানে পাওয়া যায় নানা ধরনের। বিশেষ করে বৈশাখ, বসন্তবরণ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পূজা-পার্বণে মেয়েরা এ গয়না পরে রঙিন হয়ে ওঠেন। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া এসব গয়না তরুণীদের সাজে দেয় অনন্য মাত্রা। ঝলমলে নীল, সবুজ কিংবা লাল পাথর বসানো আংটি, দুল বা নেকলেস প্রতিদিনকার ব্যবহারের জন্যও আদর্শ। আবার অনেকে সংগ্রহ হিসাবেও রাখেন এ অলঙ্কার। দামেও বেশ সাশ্রয়ী। ৫০ থেকে শুরু করে কয়েকশ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায় দারুণ সব নকশা। অন্যদিকে মেয়েদের নিজস্ব রুচি ও ফ্যাশন সচেতনতা অনুযায়ী ডিজাইন বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা থাকায় এ বাজার সব সময় থাকে প্রাণবন্ত। হাতে বানানো গয়নার প্রতিটি নকশায় মেলে এক ধরনের ভিন্নতা ও শিল্পীর মমতা। মাটির গয়নায় যেমন আছে ঐতিহ্যের গন্ধ, তেমনি রঙিন পুঁতির মালায় মেলে আধুনিকতার ছোঁয়া। পাথরের তৈরি আংটি বা নেকলেসও তরুণীদের সাজে আনে এক অনন্য দীপ্তি। সুতরাং উৎসবের দিন হোক বা নিত্যদিনের সাজগোজ, পুঁতি-মাটি আর পাথরের এ গয়না মেয়েদের সাজকে করে তোলে রঙিন ও অনন্য।