মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠা সেই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠা সেই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

নেত্রকোনার বারহাট্টায় মসজিদের টাকা আত্মসাত ও সড়কের খোয়া লুটসহ বেশকিছু অভিযোগে উঠা বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম টিপন মিয়াকে (৫০) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।

বহিষ্কৃত টিপন মিয়া উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের মাঝপাড়া এলাকার মৃত হাজী আব্দুল করিমের (চান্দু মিয়া) ছেলে। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সহমুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন পদে ছিলেন।

এর আগে গত গত ৭ আগস্ট পাঠক নন্দিত দৈনিক যুগান্তরে ‘মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, বিএনপির নেতাকে শোকজ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মোস্তাক আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং নীতি ও আর্দশ পরিপন্থি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে টিপন মিয়াকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর টিপন মিয়া দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গ্রামের মাঝপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি হন। তারপর মসজিদের দান-অনুদানের টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করেন। সম্প্রতি গ্রামের নির্মাণাধীন পাকা সড়ক থেকে কয়েক গাড়ি ইটের খোয়া লুট করেন টিপন মিয়া। লিজকৃত নদীর থেকে আয়ের টাকা গ্রামের লোকজনকে না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া দলীয় প্রভাব ব্যবহার করে এলাকার মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগীরা মিলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগ করেন। পরে টিপন মিয়াকে শোকজ করা হয়।

টিপন মিয়ার ছোট ভাই মো. রুকন মিয়া বলেন, আমার ১৪০ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে রেখেছে টিপন। তার কারণে জমিতে চাষাবাদ করতে পারছি না। তাকে চাঁদা না দিলে জমি ছাড়বে না। তার কারণে এলাকার মানুষ অশান্তিতে রয়েছে। এদিকে মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, চাঁদাবাজিসহ এমন কোন কাজ নেই তিনি করছেন না।

মল্লিকপুর মাঝপাড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, টিপন নিজে নামাজ না পড়লেও গত বছরের ৫ আগস্টের পর দলীয় প্রভাবে মসজিদ কমিটির সভাপতি বনে যায়। মসজিদের একটি বড় পুকুর রয়েছে, এটি ৩ লাখ টাকায় লিজ দেওয়া হতো। টিপন সভাপতি হয়ে নিজেই পুকুরটি লিজ নেয়। তবে টাকা পয়সা কোনকিছুই দেয়নি। এছাড়া দান-অনুদানের টাকার কোন হিসাব নেই।

সিংধা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম ইনচান বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে এমন কোন অপকর্ম নাই যা টিপন করেনি। চাঁদাবাজি, জোর করে জমি দখল, মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, নদীর টাকা আত্মসাতসহ সকল অপকর্ম তিনি করছেন। এতে দলের বদনাম হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ বিষয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতারা ব্যবস্থা নিবেন এই আশা রাখছি।

অভিযোগের বিষয়ে টিপন মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতেই প্রতিপক্ষের লেকজন এসব ছড়াচ্ছে।