বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে আত্মীয়তা করতে চায় না কেউ
জামালপুরের মাদারগঞ্জে পাকা সড়ক ও সেতু না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ। এতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চলাচলের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের নাংলা বাঁধের মাথা এলাকায় পাকা সড়ক ও যমুনার শাখা নদীতে সেতু না থাকায় প্রায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাঁকো দিয়ে দুই উপজেলার অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন বৃদ্ধ, নারী, শিশু, রোগী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় কৃষকরা চলাচলে দুর্ভোগে পড়ছেন।
এদিকে সেতু না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে পারে না এসব এলাকায়। ফলে মুমূর্ষু রোগী ও অন্তঃসত্ত্বা নারীরা পড়ছেন বিপদে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও পাকা সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচন এলে স্থায়ী সড়ক নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কোনো উদ্যোগ নেন না। বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধিদের কাছে ঘুরেও সড়কের বিষয়ে মিলছে না কোনো সমাধান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ সড়ক দিয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের নাংলা, নাদাগাড়ী, পশ্চিম সুখনগরী, জোড়খালী ইউনিয়নরে ফুলজোড়, কাইজের চর, আতামারী, বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শোনপঁচা, নান্দিনা চর, ডাকাতমারী, বোহাইল ইউনিয়নের ধারাভর্ষা, শংকরপুর, জাওনের চরসহ ১৫ গ্রামের মানুষের চলাচল করে।
নাংলা এলাকার মনির হোসেন বন্যা বলেন, যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এই এলাকায় মানুষ আত্মীয়তা করতে চায় না। আর কত কষ্ট করবে এই এলাকার মানুষ? আমরা এখানে একটি পাকা সড়ক চাই।
ডাকাতমারা এলাকার কৃষক সোলাইমান মণ্ডল বলেন, সড়ক না থাকায় এ অঞ্চলের কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ঠিক সময়ে বাজার নিতে পারে না। ফলে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। এখানে একটি সেতু হলে কৃষকদের খুব উপকার হবে।
বালিজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মুসা বলেন, একটি পাকা সড়কের অভাবে ১৫টি গ্রামের স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাকা সড়ক নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর কষ্ট অনেকটাই কমে আসবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া তমাল বলেন, গাবেরগ্রাম-নাংলা সড়কের নাংলা বাঁধের মাথা সড়কটি পাকা হওয়া প্রয়োজন। তবে সড়কটির আইডি নেই। আগে আইডির জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, এটি দ্রুততম সময়ে অনুমোদন হবে। আইডি হলে সেখানে কোন চেইনেজের সেতু প্রয়োজন সেটি উল্লেখ করে প্রস্তাব পাঠানো হবে।