ভিকি, নিশো–নাবিলাদের ‘আকা’ দেখে কী বলছেন দর্শকেরা

ভিকি, নিশো–নাবিলাদের ‘আকা’ দেখে কী বলছেন দর্শকেরা


আফরান নিশো চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের শুরুতেই ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন। পরে ‘দাগি’ সিনেমাতেও তিনি আলোচিত ও প্রশংসিত হয়ে জায়গা ধরে রাখেন। তৃতীয় সিনেমা হিসেবে ‘তাণ্ডব’-এ ক্যামিও চরিত্রেও প্রশংসিত হন। তাঁকে ঘিরে দর্শকদের মধ্যে শুরু থেকেই আগ্রহ ছিল।

এদিকে মাসুমা রহমান নাবিলাও সিনেমায় সফল নাম। ‘আয়নাবাজি’ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরুর পরে বুঝে পা ফেলেছেন। গত বছর আলোচনায় আসেন শাকিবের নায়িকা হিসেবে ‘তুফান’ সিনেমায় অভিনয় করে। এই দুই আলোচিত অভিনয়শিল্পী এবার এসেছেন নতুন ওয়েব সিরিজ ‘আকা’য়।

প্রথমবারের মতো সিরিজে একসঙ্গে এই জুটি। যে কারণে ওয়েব সিরিজটির মুক্তির ঘোষণার পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করে। এবার নিশোর সঙ্গে কতটা জমাতে পারলেন নাবিলা। তাঁদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কী লিখছেন দর্শকেরা?

সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিরিজ ‘আকা’য় তাঁদের একসঙ্গে পেয়ে আগ্রহী দর্শকদের মধ্যে সাজ্জাদুল রহমান নামে একজন লিখেছেন, ‘পরিচালক ভিকি জাহেদ আবারও ভীষণ রহস্যময় গল্পের একটা কনটেন্ট নির্মাণ করেছেন। আমাদের চারপাশেই এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাদের আসল চেহারার প্রতিচ্ছবিটা হয়তো অধিকাংশ সময়ই আমাদের চোখের আড়ালেই থেকে যায়। এই ওয়েব সিরিজের গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে এমন একজন মানুষ রয়েছেন, যার নানান কর্মকাণ্ড একটা সময় এই গল্পটাকে অনেক বেশি রহস্যময় করে তুলেছিল। সিরিজে আফরান নিশোর অভিনয় ছিল দেখার মতো।’

সিরিজে ফুটে উঠেছে শৈশব থেকে নানাভাবে বঞ্চিত এক পরিশ্রমী তরুণের গায়ক হওয়ার গল্প। কিন্তু নানা বাধায় সে সংগীত থেকে দূরে সরে যায়। হয়ে ওঠে অপরাধী। এমনটাই লিখেছেন সাদিয়া ইভা নামের এক দর্শক। নাটক সংশ্লিষ্ট একটি গ্রুপে সিরিজটি নিয়ে সাদিয়া আরও লিখেন, ‘গল্পটি কেবল একটি ওয়েব সিরিজ নয়, এটি সমাজের বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন। আমাদের চারপাশে কত মানুষ আছে, যারা স্বপ্নভঙ্গ, ব্যর্থতা আর চাপের কারণে অজান্তেই অন্ধকার পথে হাঁটছে। তারা হয়তো পাশের বাসার ছেলে, কর্মস্থলের সহকর্মী বা একেবারে সাধারণ কোনো মানুষ। একসময় তারাই হয়ে ওঠে ভয়ংকর অপরাধী। সমাজে প্রতিদিনই আমরা এমন খবর দেখি—কেউ হঠাৎ খুনি হয়ে গেল, কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল, কেউ অপরাধে যুক্ত হলো।’

অভিনয়শিল্পীদের প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘আফরান নিশো চরিত্রটিকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে দর্শক একদিকে ভীত হয়, অন্যদিকে বাস্তবের সঙ্গে মিল খুঁজে পাবে। পাশাপাশি নিজেদের অভিনয় দিয়ে নাবিলা, ইমতিয়াজ বর্ষণ ও আজিজুল হাকিমও সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছেন।’

হইচইয়ের সিরিজটি নিয়ে দর্শকদের কেউ কেউ লিখছেন রহস্যময় একটি গল্প। একই সঙ্গে বলছেন, উপস্থাপনা দর্শকদের নজর কেড়েছে। তামান্না আক্তার নামের একজন দর্শক বাংলা চলচ্চিত্র গ্রুপে লিখেছেন, ‘আফরান নিশো তাঁর অভিনয়ে দেখিয়েছেন ভেতরের দ্বন্দ্ব আর অদম্য প্রতিশোধস্পৃহা। ‘আকা’ কেবল একটি থ্রিলার সিরিজ নয়, বরং দর্শকের মনে দাগ কেটে যাওয়া এক মানসিক যাত্রা, যেখানে স্বপ্নভঙ্গ, যন্ত্রণা আর প্রতিশোধ একই সুরে মিশে গেছে। সঙ্গে প্রতিটা দৃশ্যে ভিকি জাহেদের নির্মাণ দক্ষতা পাওয়া যায়।’

পুরো গল্পটি এগিয়েছে সিরিজের আবুল কালাম আজাদ চরিত্রের অভিনেতা নিশোকে ঘিরে। তাঁর তুলনায় মেঘা চরিত্রে মাসুমা রহমান নাবিলার উপস্থিতি কম ছিল। তবে ভক্তরা তাঁর উপস্থিতিকে আলাদাভাবে গ্রহণ করেছেন। সৈয়দ আবদুল্লাহ নামের একজন লিখেছেন, ‘নাবিলার উপস্থিতি, সিরিজটিতে একধরনের প্রশান্তি এনে দিয়েছে। তাঁর অভিনয় ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এবং নিশোর সঙ্গে তাঁর রসায়নও ভালো লেগেছে। জুটি হিসেবে তাদের উপস্থিতি ছিল সুন্দর ও বিশ্বাসযোগ্য।’

ক্রাইম, ড্রামা ও রহস্য ঘরানার এই ওয়েব সিরিজের মতামত প্রকাশ করতে গিয়ে মুস্তাসিন মাহাদী নামের এক দর্শক লিখেছেন, ‘ভিকি জাহেদের শেষ কাজগুলো তাঁর নামের সঙ্গে সুবিচার করতে পারছিল না। তবে “আকা” যথেষ্ট সুবিচার করা সিরিজ। তাঁর কাজের প্রধান আকর্ষণ, সংলাপ আর এই সিরিজে সবচেয়ে ভালো লাগার দিক এটাই। সেই সঙ্গে থমথমে থ্রিলিং ব্যাপারটাও ছিল। তবে যেসব সিনেমায় কী হচ্ছে, কে করছে, কেন করছে আগে থেকেই জানা থাকে, সেখানে সাসপেন্স আরও বেশি রাখা উচিত, স্ক্রিন প্লে আরও ভালো আশা করেছিলাম বিশেষ করে লাস্টের দিকে। শেষ বড্ড তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে মনে হয়েছে। যদিও সিরিজটা যথেষ্ট উপভোগ করার মতো। আমার কাছে ৭ বা ৭.৫ দেওয়ার মতো।’

সিরিজটি আইএমডিবি রেটিং ৭.৭। এর আগে ‘আকা’ সিরিজের গল্প প্রসঙ্গে পরিচালক ভিকি জাহেদ প্রথম আলোকে জানান, গল্পে ন্যায়-অন্যায়, শোধ-প্রতিশোধ, রহস্য ও রোমাঞ্চের জটিল একটা কাহিনি দেখানো হয়েছে।