মঙ্গল গ্রহের একটি শুকনা নদীর চ্যানেলে বেশ কিছু নতুন ও ভিন্ন ধরনের পাথরের সন্ধান পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পাঠানো পারসিভিয়ারেন্স রোভার। এসব পাথরে প্রাচীন অণুজীব জীবনের সম্ভাব্য লক্ষণ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে নাসা। ২০২১ সাল থেকে মঙ্গল গ্রহের বিভিন্ন প্রান্তের নমুনা সংগ্রহ করছে রোভারটি। বর্তমানে রোভারটি সন্ধান পাওয়া পাথরগুলো ড্রিলের মাধ্যমে ছিদ্র করে নমুনা সংগ্রহ করছে। এসব নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এসইটিআই ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী জেনিস বিশপ ও ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস অ্যামহার্স্টের বিজ্ঞানী মারিও প্যারেন্টে এই আবিষ্কারকে বেশ উত্তেজনাময় বলে অভিহিত করেছেন। যদিও পাথরের থাকা বিভিন্ন নমুনার বিবর্তন অজৈবিক প্রক্রিয়ার কারণেও হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জোয়েল হুরোভিটজ বলেন, এখনই আসলে বলা যাচ্ছে না এটি প্রাণের চূড়ান্ত প্রমাণ। সেখানে অণুজীব জীবন করতে পারে হয়তো। রোভারটি এখন পর্যন্ত যত লক্ষণ বের করেছেন, তার মধ্যে নতুন শিলাগুলো সবচেয়ে ভালো ও আকর্ষণীয়। এটি ২৫তম নমুনা। রোভারিটি ৩০টি নমুনা সংগ্রহ করবে বলে জানা গেছে। কোটি কোটি বছর আগে অন্য একটি গ্রহে কোনো জীবন্ত বস্তু ছিল এমন কিছু প্রমাণের বিষয়টি এক অসাধারণ ব্যাপার। আবার প্রাণের খোঁজ না মিললেও প্রকৃতি কীভাবে আমাদের ধোঁকা দিতে পারে, তার একটি মূল্যবান শিক্ষা পাব আমরা।
মঙ্গল গ্রহের নেরেটভা ভালিস নামের একটি শুকনা নদী চ্যানেল থেকে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নাসা। চ্যানেলটি একসময় জেজেরো গহ্বরে পানি নিয়ে যেত। মাটির মতো লাল রঙের এই কাদা পাথরের নমুনাটি পারসিভিয়ারেন্সের যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এরপর সেখানে জৈব কার্বন ছাড়াও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সন্ধান পাওয়া যায়, যার মধ্যে আয়রন ফসফেট ও আয়রন সালফাইড রয়েছে। পৃথিবীতে অণুজীব যখন জৈব পদার্থ ভেঙে খাদ্য গ্রহণ করে তখন এই রাসায়নিক যৌগ উপজাত হিসেবে তৈরি হয়।
নাসার তথ্যমতে, রোভারের সংগ্রহ করা বিভিন্ন নমুনা ১০টি টাইটানিয়ামের বাক্সে রাখা হয়েছে। বাকি নমুনা রোভারের ভেতরে আছে। নমুনাগুলো পৃথিবীতে আনতে বেশ দেরি হবে। উৎক্ষেপণের সময় পারসিভিয়ারেন্স রোভারের সংগ্রহ করা নমুনা ২০৩০ সালে পৃথিবীতে ফেরত আনার কথা থাকলেও সেই পরিকল্পনা ২০৪০ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি