আলাস্কায় হঠাৎ নতুন দ্বীপের জন্ম, নাসার সতর্কতা
আর্কটিক অঞ্চলে দ্রুত বরফ গলার কারণে আলাস্কার একটি হ্রদের মাঝখানে ৫ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নতুন দ্বীপ তৈরি হয়েছে। নাসার স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে এই ঘটনা ধরা পড়ার পর সতর্কবার্তা দিয়েছেন সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ায় ১৩ জুলাই থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে তৈরি হয়েছে দ্বীপটি।
নাসা তাদের ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইটের ১৯৮৪ ও ২০২৫ সালের ছবি তুলনা করে এই ভৌগোলিক পরিবর্তনটি শনাক্ত করেছে। নাসার তথ্যমতে, একসময় মাউন্ট প্রাউ নবের সঙ্গে যুক্ত থাকা বিশাল বরফের স্তর সম্পূর্ণভাবে ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় নতুন এই দ্বীপ তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিকোলস কলেজের গবেষক মাউরি পেল্টো জানান, কয়েক দশক ধরেই বরফের স্তর ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। এর ফলে প্রাউ নব পর্বত থেকে প্রায় সম্পূর্ণভাবে বরফ অদৃশ্য হয়ে গেছে। স্যাটেলাইটের তথ্যমতে, ১৯৮৪ সালে আলসেক হ্রদের আয়তন ৪৪ বর্গকিলোমিটার থাকলেও ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ বর্গকিলোমিটার। পার্শ্ববর্তী হিমবাহের অনেক হ্রদ একইভাবে প্রসারিত হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাকে কেবল একটি ভূতাত্ত্বিক ঘটনা হিসেবে মানতে নারাজ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। বরফ গলে যাওয়ায় উন্মুক্ত হওয়া বিভিন্ন শিলা আরও বেশি তাপ শোষণ করে বরফ গলার প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে তুলছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
নাসা আর্থ অবজারভেটরির বিজ্ঞানী লিন্ডসে ডোরম্যান জানান, দক্ষিণ-পূর্ব আলাস্কার উপকূলীয় সমভূমিতে বরফের জায়গা দ্রুত দখল করে নিচ্ছে পানি। এই এলাকার হিমবাহের স্তর পাতলা হয়ে দূরে সরে যাচ্ছে। এর ফলে হিমবাহের সম্মুখভাগে বরফগলা পানির হ্রদ তৈরি হচ্ছে। একটি নতুন দ্বীপ তৈরির পাশাপাশি হিমবাহের এই আকস্মিক পরিবর্তন আলসেক হ্রদের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলেছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিকোলস কলেজের বিজ্ঞানী মাউরি পেল্টো নাসাকে সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, আলাস্কা দ্রুত নতুন হ্রদ এলাকায় পরিণত হচ্ছে। সেখানে হিমবাহের বরফ গলে আকস্মিক বন্যা হতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল