কীভাবে এআই ব্যবহার করে বাজার খরচে শত শত ডলার সাশ্রয় করছেন এই নারী
হুট করেই চাকরি হারালেন ব্রুক ফেরিয়ার ও তাঁর স্বামী। এর আগে কখনো সাপ্তাহিক বাজার খরচের হিসাবের ব্যাপারে খুব একটা মনোযোগ দিতেন না ব্রুক।
কিন্তু ওই সংকটের মুহূর্তে তিনি কী রান্না করবেন, ছোট্ট দুই সন্তানের মুখে কী তুলে দেবেন, সেসব ভাবতেও পারছিলেন না।
সে সময়ই সীমিত বাজেটে রান্নার পরিকল্পনা করতে এআইয়ের সহায়তা নেওয়ার কথা ভাবলেন তিনি।
দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এবং বাড়ন্ত দুটি শিশুর জন্য কম খরচে খাবার তালিকা করা প্রয়োজন। ব্রুক এই কাজ করে দিতে বললেন চ্যাটজিপিটিকে। সঙ্গে দিলেন খুঁটিনাটি আরও অনেক নির্দেশনা।
যেমন মসুর ডাল বাদ দিয়ে লো কার্ব বা কম শর্করার খাবার, যাতে আবার থাকবে লুকানো সবজি, এমন কিছুর জন্য প্রম্পট করলেন তিনি।
চ্যাটজিপিটি বাজারদরও যাচাই করে দিল তাঁকে। কোন জিনিস ঠিক কী পরিমাণে কিনতে হবে, সেই তালিকাও করে দিল চ্যাটজিপিটি।
সকালের নাশতা, রাতের খাবার আর স্ন্যাকস মিলিয়ে এক সপ্তাহে পরিবারটির খরচ হলো ১৪০ অস্ট্রেলীয় ডলার। আগে কিন্তু ব্রুক এভাবে বাজার করতেন না। বরং তখন তিনি বিভিন্ন রকম মাংস কিনতেন, অনেক সবজি আর ফল কিনতেন।
মোটকথা, ঘরে থাকত প্রচুর খাবার। কিন্তু ৪-৫ দিনেই ৪০০–৫০০ ডলার খরচ হয়ে যেত তাতে। ফ্রিজের খাবার দেখে যা মনে হতো, সেটাই রান্না করে ফেলতেন তিনি প্রতি রাতে। রান্না নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা থাকত না। ফলে রান্না হয়ে যেত অতিরিক্ত। খাবারের অপচয়ও হতো ভীষণ।
এখন দেখা যাচ্ছে, রান্নার পর বাকি থাকা বহু জিনিস দিয়েও ব্রুক স্ন্যাকসের ব্যবস্থা করে ফেলতে পারছেন। প্রয়োজন অনুযায়ী চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করে পাচ্ছেন কার্যকর উত্তর।
একবার অসুস্থ অবস্থায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর মতো খাবারের খোঁজ চেয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ঘরে পড়ে থাকা উপকরণ কাজে লাগানোর উপায়ও জানতে চেয়েছিলেন। সব উত্তরই দিয়েছিল এআই চ্যাটবট।
খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানী এমা বেকেট জানান, খাবার তালিকা করার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোয় কোনো সমস্যা নেই। তবে নিজের চাহিদার বিষয়ে ঠিকঠাক নির্দেশনা দেওয়া জরুরি।
কেবল মিতব্যয়িতাই নয়, পুষ্টির দিকটাও ঠিক রাখা চাই। যেমন অস্ট্রেলিয়ান ডায়েটারি গাইডলাইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত আঁশসমৃদ্ধ খাবার বাছাইয়ের বিষয়টা প্রম্পটে উল্লেখ করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
এমা বেকেটের মতে, খাদ্যতালিকা তৈরির কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন উপকারী হওয়ার একটি কারণ হলো এর মানবীয় আবেগ না থাকা। যেমন ব্রুক ফেরিয়ার এখন কেবল ততটুকুই খাবার কেনেন, যতটুকু তাঁর প্রয়োজন।
ব্রুক ও তাঁর স্বামী অবশ্য এখন নতুন চাকরি পেয়েছেন। তবে বাজার খরচ বাঁচানোর পরিকল্পনার ভার তাঁরা রাখতে চান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাতেই।
এভাবে যে অর্থ বেঁচে যাচ্ছে, তা সন্তানদের কাপড় বা খেলনার জন্য ব্যয় করার সুযোগ থাকছে তাঁদের। ভবিষ্যতে বাড়ি মেরামতের জন্য আরও অর্থ সঞ্চয়ের কথাও ভাবছেন এই দম্পতি।
সূত্র: অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন