এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই দারুণ সম্ভাবনা জাগায় হংকং। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে ফেলে ইয়াসিম মুর্তজারা। ম্যাচের এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল অঘটন ঘটিয়েও দিতে পারে হংকং। তবে একের পর ক্যাচ ছেড়ে দিলে কি তা আর সম্ভব হয়? একটি-দু’টি করে মোট ছয়টি ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন হংকং ক্রিকেটাররা। সেই সুবাদে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জিতে যায় লঙ্কানরা। শ্রীলঙ্কার সাবেক অলরাউন্ডার রাসেল আর্নল্ড ধারাভাষ্য থেকে বললেন, হংকং যদি তাদের হারাতে পারত, তবে গোটা বাংলাদেশে খুশির জোয়ার বয়ে যেত।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন পাথুম নিশাঙ্কা। ৪৪ বলের সে ইনিংসে তিনি জীবনই পান চারবার। আর ৫৭ রানের তৃতীয় উইকেটের জুটিতে নিশাঙ্কাকে সঙ্গ দেয়া কুশল পেরেরা ২০ রান করার পথে বেঁচে যান দু’বার। ম্যাচ যখন কার্যত শেষ, তখন ধারাভাষ্যে হংকংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের হতাশাও তুলে আনলেন রাসেল আর্নল্ড। তিনি বলেন, ‘হংকংয়ের কী দারুণ একটা সুযোগ ছিল! শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলে তাদের জন্য যেমন ইতিহাস হতো, তেমনি উল্লাসের জোয়ার বয়ে যেত ঢাকা ও চট্টগ্রামে। আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যাওয়া বাংলাদেশের সম্ভাবনায় নতুন প্রাণ ফিরত। এছাড়া এই গ্রুপও পুরোপুরি উন্মুক্ত হয়ে পড়ত। তখন সবারই সমান সম্ভাবনা থাকত তখন..।’
আরেক ধারাভাষ্যকার সুনিল গাভাস্কার দোষ দেন হংকংয়ের ফিল্ডিংকেই। ভারতের এ সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘কোনো দল যদি পুরো টুর্নামেন্টে ছয়টি ক্যাচ ছাড়ে, সেটি মেনে নেয়ার মতো নয়। হংকং এক ম্যাচেই ছেড়েছে ছয়টি.. এটি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। তাদের জন্য কত বড় সুযোগ ছিল..।’
গত বছর এসিসি প্রিমিয়ার কাপে নেপালকে হারিয়ে যোগ্যতা অর্জন করা দলটি মূল আসর থেকে বিদায় নিল খালি হাতেই। যদিও নিজের দলের পারফর্মেন্স নিয়ে গর্বিত হংকং অধিনায়ক মুর্তজা। বাঁহাতি এ স্পিনিং অলরাউন্ডার বলেন, ‘ছেলেরা আজ যেভাবে লড়াই করেছে, আমি সত্যিই গর্বিত। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে নিজাকাত (৩৮ বলে ৫২*) ও আনসি (রাথ, ৪৬ বলে ৪৮) গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছে। ফিল্ডিংয়ে কিছু সুযোগ আমরা হাতছাড়া করেছি। তবে ব্যাট-বলে ছেলেদের পারফর্মেন্সে দিনশেষে আমি গর্বিত।’
মুর্তজার গর্ববোধ করা স্বাভাবিক। কেননা, টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে দুই ওপেনার জিশান আলী ও আনসি। পঞ্চম ওভারে দলীয় ৪১ রানে ভাঙে সে জুটি। ওয়ান ডাউন ব্যাটার বাবর হায়াত দ্রুত ফিরলেও, পরের উইকেটে ৪৩ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন নিজাকাত ও আনসি। তাতেই প্রায় দেড়শ’ ছোঁয়া ইনিংস পায় হংকং। লঙ্কানদের দলীয় ১১৯ থেকে ১২৭ রানের মধ্যে চার উইকেট তুলে নিয়ে সম্ভাবনাও তৈরি করে হংকং। তবে সপ্তম উইকেটে দাসুন সানাকা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ১১ বলে অপরাজিত ২৬ রানের জুটিতে জয়ের প্রান্তে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা।