‘নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে পারে বাংলাদেশ’

‘নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে পারে বাংলাদেশ’

চলতি মাসের শেষদিনে পর্দা উঠবে এবারের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ আসরের। ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে আট দলের এই টুর্নামেন্ট। এর আগে ২০২২ সালে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। যেখানে ৭ ম্যাচে তাদের জয় মাত্র ১টি। এবারও সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করতে ব্যর্থ হয় টাইগ্রেসরা। পরে পাকিস্তানে বাছাইপর্বে রানার্সআপ হয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। গেলো দুই বছর ওয়ানডেতে ভালো-খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে গেছে টাইগ্রেসরা। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ ড্র আর পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতেছে জ্যোতির দল। আবার পাকিস্তানে গিয়ে হেরেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে। বাছাইপর্ব থেকে ফেরার আর কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলেনি তারা। তার জায়গায় ছেলেদের অনূর্ধ্ব’১৫ দলের বিপক্ষে খেলিয়ে নারীদের প্রস্তুতির ব্যবস্থা করেছে বিসিবি। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি, স্কোয়াডের প্রতি ভরসা আর বিশ্বকাপে নিজেদের লক্ষ্য নিয়ে দৈনিক মানবজমিনের সঙ্গে আলাপ করেছেন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের হেড কোচ সারোয়ার ইমরান। তার চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য এখানে দেওয়া হলো-

প্রস্তুতি কেমন হলো?
যতটুকু সম্ভব ভালো করার সবরকম ফ্যাসিলিটিস দেওয়া হয়েছে। সামনের সিলেট ট্যুরে আরও ক্লিয়ার হওয়া যাবে প্রস্তুতি নিয়ে। এছাড়া আরও ভালো হতো যদি টেস্ট খেলুড়ে দেশের সঙ্গে অন্তত একটা সিরিজ খেলতে পারতাম। যদিও চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু সম্ভব হয়নি।

ছেলেদের সঙ্গে খেলে আন্তর্জাতিক সিরিজের গ্যাপ কতোখানি পূরণ হচ্ছে?
ছেলেদের দল তো শক্তিশালী! ওদের ফিল্ডিং যেমন আমার মনে হয় ৯৯ শতাংশ মেয়েদের বড় দলগুলোর চেয়েও বেটার। বোলিংয়েও ভেরিয়েশন পেয়েছি, বিকেএসপিতে তো দুইভাগ হয়ে খেলেছে। এখন সিলেটে মূল জাতীয় দল খেলবে। এখানে ওদের সঙ্গে রেজাল্ট বের করতে পারলে দুর্দান্ত হবে সেটা।

ব্যাটিং এখনো চিন্তার বিষয় কিনা...
আমাদের তো ওই মানের ব্যাটার নেই। পুরো দল একসঙ্গে খেললে আমাদের ব্যাটিং আরও বেটার হবে। আর ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা কিন্তু কমছে। কোয়ালিফায়াএ আমরা ২৭০-৭৫ করছি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কলাপ্স করার পরও ২০০ ছাড়িয়েছে। শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে একটা বাজে দিন্‌ গেছে। কিছু খেলোয়াড় এখন আছে যারা ব্যাটিংয়ের চিন্তা দূর করতে পারে। আশা করি বিশ্বকাপে আড়াইশ করতে পারবো নিয়মিত

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সুমনাকে না রাখা কতোটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল
এটা আসলে ক্লোজ কল। সুমনা ভালো অফ স্পিনার কিন্তু যে জিনিসটা আমরা গুরুত্ব দিয়েছি, শেষ কোয়ালিফায়ারেও কিন্তু বাঁহাতিদের বিপক্ষে সুমনার কাছ থেকে ভালো বোলিং পাইনি অতটা। অনুশীলনেও সে বাঁহাতিদের বিপক্ষে ভুগছিল। এ নিয়ে অনেক কাজ করা হয়েছে কিন্তু তারপরও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। যাকে (নিশিতা আক্তার নিশি) নেওয়া হয়েছে সে বাঁহাতিদের বিপক্ষে ভালো করছে। সুমনা এমনিতে ভালো বোলার মিডল অর্ডারে...কিন্তু আমাদের কনসার্নের জায়গা পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ওদের বেশিরভাগ মূল ব্যাটার বাঁহাতি। এই দুটো ম্যাচ আমাদের জেতার ভালো সম্ভাবনা আছে, এই দুটো দলের বিপক্ষে আমাদের জিততেই হবে। এটা আসলে কৌশলগত সিদ্ধান্ত, সবাই দেখলাম এটা নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু লোকাল লীগেও দেখবেন সুমনা উইকেট পেলেও খরুচে বোলিং করেছে। লুজ বোলিংও করেছে অনেক।

বিশ্বকাপে লক্ষ্য কী?
প্রথমত শেষ বিশ্বকাপের চেয়ে ভালো খেলা। আমরা সেই প্রত্যাশা নিয়েই যাবো আর আমাদের প্রথম টার্গেট থাকবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারানো। এছাড়াও আরও দুই একট দল যেমন আছে, সেরকম স্পিন যদি উইকেটে থাকে তাহলে আমরা সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ আছে আমাদের, মেয়েরাও এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে।

অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড বা ভারতের বিপক্ষে খেলে সেমিফাইনাল খেলাটা কতোটা চ্যালেঞ্জিং হবে?
চ্যালেঞ্জিং তো অবশ্যই। একটা ম্যাচ জেতাও চ্যালেঞ্জিং, দুইটা ম্যাচ আরও বেশি, ৩টা আরও বেশি! কিন্তু সম্ভব। আমরা যদি ব্যাটিং বোলিং ঠিকমতো করতে পারি...স্পিন বিভাগ নিয়ে আমরা দারুণ আশাবাদী এই বিভাগ প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করলে আমি নিশ্চিত রেজাল্ট বের হবে।

একটা ম্যাচ শ্রীলঙ্কায়, বাকি সব ভারতে
এটা ভালো হয়েছে অবশ্যই। আমাদের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওদের দেশে খেলতে হচ্ছে না, ভারতে খেলবো। এক দেশ থেকে আরেক দেশে বারবার যাওয়ার ঝক্কিও পোহাতে হবে না। সবমিলিয়ে বেশ ভালোই হইছে।

পেস বোলার সংকট!
আমরা এই ডিপার্টমেন্টে একটু...তারপরও আমাদের বিশ্বমানের পেসার মারুফা খেলবে বিশ্বকাপ। আমার মনে হয় এই ডিপার্টমেন্টে সেরকম কাজ হয়নি। বিশ্বকাপ শেষে আমরা পেসারদের নিয়ে কাজ করবো,। ওরা সারাবছর জাতীয় দলের আশেপাশে থাকবে। ইমার্জিং, অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকবে। প্রয়োজনে জাতীয় দলের সঙ্গে ক্যাম্প করবে। যাতে করে পেসারদের বিকল্প খুজে পেতে সমস্যা না হয়।

ডেথ ওভারে দ্রুত রান তোলার ঘাটতি আছে কি?
না, আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। সুবহানা ভালো করছে, স্বর্ণা, ঋতুমনিও ভালো করছে। আসলে ৫০ ওভার খেলাটাও বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে স্লগ ওভার কাজে লাগানো গেলে ওদের কাছ থেকে ফল পাবো। ফাহিমাও ডেথ ওভারে ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পারে।