কোন পথে বিসিবি’র নির্বাচন, কে হবেন সভাপতি

কোন পথে বিসিবি’র নির্বাচন, কে হবেন সভাপতি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে আমিনুল ইসলাম বুলবুল টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাননি। তিনি বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। সেই সুবাদে টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবেই পরিচিত। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে খেলতে চেয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ইনিংস। বিসিবিকে গুছিয়ে দিয়ে তার দ্রুতই নিজ ভুবনে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। আইসিসি’র চাকরি ছেড়ে এসেছিলেন, হয়তো ফিরবেন ফের সেখানেই। তবে এবার তিনি মত বদলেছেন। বিসিবি’র সভাপতি হিসেবে খেলতে চান টেস্ট ইনিংস। মানে, লম্বা সময়ের জন্য তিনি দেশের ক্রিকেটের দায়িত্ব সামলাতে চান বলেই জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে। এরপরও এ ক্রিকেট আর রাজনীতি তো একই সুতোয় বাঁধা। বুলবুল চাইলেও শেষ পর্যন্ত কে হবেন বিসিবি সভাপতি, তা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

অন্যদিকে, অক্টোবরেই বিসিবি’র নির্বাচন হওয়ার কথা। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বোর্ড ভেঙে দিয়ে নির্বাচন ঘোষণার কথা। কিন্তু এ নিয়ে বিসিবি কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে এখনো কোনো উত্তর মেলেনি। তবে নানা সূত্রের খবর, হয়তো অক্টোবরে নির্বাচন হচ্ছে না। তাই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে- কোন পথে বিসিবি’র নির্বাচন? নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবি’র এক সিনিয়র পরিচালক বলেন, ‘এখনো নির্বাচন নিয়ে তেমন কিছু বলতে পারছি না। মাত্র ২ মাস বাকি, এর মধ্যে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোনো কিছু করা না গেলে কী হবে তাও বোঝা যাচ্ছে না। তবে সভাপতি চান সঠিক সময়ে নির্বাচন। আর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও একটা মতামত থাকবেই।’

কে হবেন বিসিবি সভাপতি, তা নিয়ে অনেক নামই শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যে বুলবুল ও মাহবুবুল আনামের নামটা বেশ জোরালোভাবেই এসেছে। নানা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ৭৪টি ক্লাবের এবং সংগঠকদের চাওয়া- সভাপতি হোক মাহবুবুল আনাম। তবে মাহবুবুল আনাম নিজেই বিসিবি’র নির্বাচন আর করবেন না বলে নিজের মতামত জানিয়েছেন। তবে এও জানা গেছে, ক্লাব সংগঠকদের দাবি জোরালো হলে এবং নির্বাচনের পরিবেশ থাকলে তিনি বিসিবি নির্বাচন করবেন। পরিচালক হয়ে এলে হতে পারেন সভাপতিও। অন্যদিকে, আমিনুল ইসলাম বুলবুল বিসিবি সভাপতি পদে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য তার যে ধরনের ‘রসদ’ বা যোগ্যতা থাকা উচিত, তা তার নেই, কারণ তিনি সরাসরি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত হয়েছেন। তবে, তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে যদি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তাকে বর্তমান পদে বহাল রাখতে চায়, তাহলে তিনি দায়িত্ব চালিয়ে যেতে রাজি আছেন। এর আগে, মে মাসের শেষ দিকে যখন তিনি বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেন, তখনই তিনি বলেছিলেন যে এটি একটি স্বল্পমেয়াদী দায়িত্ব। তিনি বলেছেন, ‘আমি তো বলেছি আমি কখনো নির্বাচন করব না। আমি কীভাবে নির্বাচন করব? নির্বাচন করতে যে রসদগুলো লাগে, সেটা আমার নেই। আমি ফ্রি ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিল থেকে এসেছি। তারা যদি আমাকে কন্টিনিউ করে, থাকব, চেষ্টা করব। ক্রিকেট পরিচালনা পর্ষদের প্রায়োরিটি হচ্ছে ক্রিকেট চালানো। নির্বাচন চার বছর পরপর হয়। সময় যেহেতু চলে এসেছে, সেটা ঠিক সময়েই হবে।’

এছাড়া সভাপতি নিয়ে যেমন আলোচনা, তেমনি দিন দিন বিসিবি’র নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তার নানা গুঞ্জন। এরই মধ্যে ক্লাবগুলোর দাবি, অক্টোবরেই বিসিবি’র নির্বাচন দিতে হবে। যদিও নানা সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে বিসিবি’র নির্বাচন করতে চাইছে না একটি পক্ষ। যদিও বুলবুল স্পষ্ট করে বলেছেন, সময়মতোই বিসিবি’র নির্বাচন আয়োজন করবেন তিনি। যদিও স্বল্প সময়ে তা করা বেশ কঠিন। বুলবুল বলেছেন, ‘যারা পূর্ণ সদস্য আছে, তাদের নির্বাচন নিয়ে কিন্তু আন্তর্জাতিক নিউজ হয় না। আমরাই সিরিয়াসলি নেই। আমরা এখন যারা ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদে আছি, আমাদের ফোকাস ক্রিকেট। অবশ্যই নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে। সেটার জন্য আমাদের নির্বাচন কমিশন এবং আনুষঙ্গিক কাজগুলো দ্রুত জানতে পারবেন।’ যদিও কারো কারো দাবি, নির্বাচন নয়, অ্যাডহক কমিটির হাতে যেতে পারে বিসিবি’র দায়িত্ব।