জাতীয় অ্যাথলেটিকসে গত আসরে চোটের কারণে অংশ নিতে পারেননি ইমরানুর রহমান। চোট পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতে ছিলেন লন্ডনে। এবার ফিরে এসেই নিজের হারানো মুকুট পুনরুদ্ধার করলেন ইমরানুর। নিজেকে প্রস্তুত করতে একবার চীনেও যান ইমরানুর। সবকিছুর পেছনে কারণ ছিল দেশের দ্রুততম মানবের মুকুট পুনরুদ্ধার করা, যেটি তিনি হারান গত ফেব্রুয়ারিতে ৪৮তম জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায়। চোটের কারণে ইমরানুরের অনুপস্থিতিতে দ্রুততম মানবের খেতাব ফিরে পান মোহাম্মদ ইসমাইল। তবে গতকাল ইমরানুরের সঙ্গে কেউ পেরে ওঠেনি। ৩২ বছর বয়সী এই স্প্রিন্টার আবার দেশের দ্রুততম মানব হলেন। পুনরায় দ্রুততম মানব হয়ে ইমরান বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। আমি ৬-৭ মাস ইনজুরিতে ছিলাম। অপারেশনও হয়েছে, কঠিন সময় পার করে আবার প্রথম হয়েছি এজন্য ভালো লাগছে।’ জাতীয় স্টেডিয়ামে গতকাল ১৭তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকসের প্রথম দিনে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিলেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ইমরানুর রহমানই। তিনি প্রত্যাশা মিটিয়েছেন। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সোনা জিতেছেন সহজেই। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নিয়েছেন ১০.৬৪ সেকেন্ড (ইলেকট্রনিক টাইমিং)। দ্রুততম মানবের মুকুট হারানো ইসমাইল এবার হয়েছেন তৃতীয়। তিনি ফিনিশ লাইন ছুঁয়েছেন ১০.৮৮ সেকেন্ডে। ১০.৮৬ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করে দ্বিতীয় হয়েছেন সেনাবাহিনীর আবদুল মোতালেব।
বাংলাদেশে দ্রুততম মানব হলেও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ১০০ মিটারে ১০.৬৪ টাইমিং মানসম্মত নয়। এ নিয়ে ইমরান বলেন, ‘এটা এখন ঠিক আছে, কারণ আমি মাঝে ২-৩ মাস অনুশীলনের বাইরে ছিলাম। সামনে এসএ গেমসে ভালো কিছু করতে চাই।’
ইংল্যান্ডের শেফিল্ডে জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইমরানুর ২০২২ সালে প্রথমবার বাংলাদেশের জাতীয় অ্যাথলেটিকসে অংশ নিয়েই রেকর্ড গড়ে ১০০ মিটারে সোনা জেতেন। সেই থেকে এই অ্যাথলেটই দেশের দ্রুততম মানবের আসনে ছিলেন এ বছরের শুরুর দিক পর্যন্ত। অল্প দিনেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নিজেকে দারুণভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। এশিয়ান পর্যায়ে অ্যাথলেটিকসে বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেটের জন্য একটা পদক জেতাই যেখানে স্বপ্ন, সেখানে ইমরানুর রীতিমতো সোনা জিতেছেন! ২০২৩ সালে এশিয়ান ইনডোর ৬০ মিটারে সোনা জেতেন তিনি। এশিয়ান র্যাঙ্কিংয়ে চলে আসেন যৌথভাবে শীর্ষে। ২০২৩ সালে থাইল্যান্ডে এশিয়ান অ্যাথলেটিকসে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে হন ১১তম, হাঙ্গেরিতে বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে প্রথম রাউন্ডে (হিটে) প্রথম। লন্ডনে একটি ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ১০.১১ সেকেন্ড সময় নেন ১০০ মিটার স্প্রিন্টে। এই টাইমিং এখন বাংলাদেশের জাতীয় রেকর্ড হিসেবেও গণ্য হচ্ছে। এমন কৃতিত্ব বাংলাদেশিদের মধ্যে তারই প্রথম এবং একমাত্র।