ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পাকাপাকিভাবে বেতিসে ফিরলেন অ্যান্টনি
রিয়াল বেতিসে ধারে গত মৌসুমটা স্বপ্নের মতো কাটান অ্যান্টনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে স্প্যানিশ ক্লাবটিতে পাকাপাকিভাবে পাড়ি জমাতে মরিয়া ছিলেন এ ব্রাজিলিয়ান তারকা। শেষপর্যন্ত বেতিসে যোগ দিয়ে ভক্তদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন অ্যান্টনি। বেতিসও তাকে বরন করে নিল রাজার বেশেই। কান্নাভেজা চোখে অ্যান্টনি শোনালেন হৃদয় নিংড়ানো সুখের গল্প।
মৌসুম শেষে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে গিয়ে আবার দুঃসময়ের জালে বন্দী হন ২৫ বছর বয়সী অ্যান্টনি। রেড ডেভিলদের পর্তুগিজ কোচ রুবেন আমরিমের স্কোয়াডে জায়গা না হওয়ার কারণেই গতবার ধারে বেতিসে যোগ দেন এ সেলেসাও ফরোয়ার্ড। মূল ক্লাবে ফিরে গিয়ে একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয় তাকে। নতুম মৌসুমেও জায়গা হয়নি আমোরিমের স্কোয়াডে। অনুশীলন করতে হয় স্কোয়াড থেকে আলাদা হয়ে। তবে অপেক্ষার অবসান হয়েছে অ্যান্টনির। তাকে দলে পেতে ২ কোটি ২০ লাখ ইউরো খরচ করতে হয়েছে বেতিসকে। বোনাস ও আনুষাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে আর ৩০ লাখ ইউরো লাগতে পারে। আর অ্যান্টনির ভবিষ্যৎ দলবদলে ইউনাইটেডের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ৫০ শতাংশ। গতবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরণের ট্রল ও সমালোচনার মুখে পড়েন অ্যান্টনি। পরে বেতিসে গিয়ে দুর্দান্ত পারফর্মেন্সে জিতে নেন ভক্তদের মন। ক্লাব ও শহরের মানুষদের সঙ্গে মিশে যান দারুণভাবে। তাই তো সবাই তাকে বরন করে নিল নিজেদের একজন হিসেবেই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতালিয়ান সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানোর পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সেভিয়া শহরের রাস্তা ধরে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে প্রবেশ করছেন অ্যান্টনি। চারপাশে ঘেরা ভক্তরা নানা স্লোগান দিচ্ছেন তার নামে। শেষমুহূর্তে স্বপ্নের চুক্তি সম্পন্ন করে অ্যান্টনি তার অসহায় সময়ের কথা শোনালেন আরেকবার, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন বেতিসের উদ্দেশ্যে। অ্যান্টনি বলেন, ‘শুধু আমার পরিবারই জানে, সেখানে (ইউনাইটেড) থাকা কতটা কঠিন ছিল। আলাদাভাবে অনুশীলন করতে হচ্ছিল...। তবে জানতাম, অসাধারণ মুহূর্তটি আসছে। কিছুটা ভয় অবশ্যই লাগছিল যে, শেষ পর্যন্ত (বেতিসের সঙ্গে চুক্তি) নাও হতে পারে। তবে অপেক্ষা করে গেছি, কেননা আমার বিশ্বাসের কমতি ছিল না।’ অ্যান্টনি আরও বলেন, ‘(দলবদের প্রক্রিয়া) খুবই কঠিন ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আজ আমি এখানে। বেতিসের জার্সি আবার গায়ে চাপাতে আমার তর সইছে না। এটি সম্ভব করায় যারা কাজ করেছেন, তাদের প্রতি কেবল কৃতজ্ঞতাই জানাতে পারি।’
ডাচ ক্লাব আয়াক্স থেকে ২০২২-এ ৯ কোটি ইউরোতে ইউনাইটেডে আসেন অ্যান্টনি। ইংলিশ ক্লাবটির ইতিহাসে দ্বিতীয় দামি ফুটবলার তিনিই। তবে নানা কারণে দামের প্রতি প্রতি সুবিচার করতে পারেননি অ্যান্টনি। সেখান থেকে এবার পাড়ি জমালেন বেতিসে। নাম ও ইতিহাসের হিসেবে ইউনাইটেডের সঙ্গে কোনো ধরণের তুলনাতেই যায় না বেতিস। এখানে পারিশ্রমিকও অনেকটাই কম হওয়ার কথা। তবে অ্যান্টনি জানালেন, টাকার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো যত্ন, ভালোবাসা। এ প্রসঙ্গে ব্রাজিলিয়ান তারকা বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যত্ন পাওয়া। এটি টাকায় কেনা যায় না। এ ক্লাবে আমার অনুভূতিই ভালো লাগার, এখানে অনেক ভালোবাসা অনুভব করি। এ কারণে এটিই ছিল আমার প্রথম পছন্দ। তাই বেতিসে ফিরতে শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। আমি আমি খুবই খুশি যে ভালোবাসার ক্লাব ও শহরে আবার আসতে পেরেছি।’