বিসিবি’র নির্বাচন ৪ঠা অক্টোবর

বিসিবি’র নির্বাচন ৪ঠা অক্টোবর

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন নিয়ে ক্রিকেট অঙ্গনে আগ্রহের কমতি নেই। আগামী ৪ঠা অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন, যা দেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এবারের নির্বাচন তুলনামূলকভাবে ভিন্ন, কারণ প্রথমবারের মতো বেশ কিছু নতুন মুখ পরিচালক পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম হলো সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও সভাপতির দায়িত্ব পালনরত আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ধারণা করা হচ্ছে, এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থী সভাপতি পদেও একে অপরের মুখোমুখি হতে পারেন। গত সপ্তাহে গঠিত হয়েছে ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন, যার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে খসড়া তফসিল প্রকাশ করেছে, যার অধীনে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে ২২-২৩ সেপ্টেম্বর, এবং জমা দেওয়া যাবে ২৫শে সেপ্টেম্বর। এরপর ২৬শে সেপ্টেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে ৪ঠা অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। যারা সরাসরি ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারবেন না, তাদের জন্য থাকছে অনলাইন বা ই-ব্যালট ও পোস্টাল ভোটের সুবিধা। এই নির্বাচনে জয়লাভ করতে হলে কাউন্সিলরদের ভোট পেতে হবে। মোট ১৭১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৭৬ জনই আসেন ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব থেকে, যা নির্বাচনের ফলাফলে বড় প্রভাব ফেলে। এছাড়া ১২ জন সদস্য ক্লাব ক্রিকেট থেকে, ১০ জন বিভাগীয় ও আঞ্চলিক পর্যায় থেকে এবং ২৫ জন অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে আসেন। নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে পরবর্তীতে বিসিবি’র সভাপতি নির্বাচিত হবেন।

বর্তমানে সভাপতির দায়িত্বে থাকা আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে ঢাকা বিভাগ থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বিভাগীয় বা জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে থাকতে হতো, যা এতদিন অস্পষ্ট ছিল। সম্প্রতি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি নতুন করে অনুমোদন দিয়েছে। আগের কমিটি থেকে মোহাম্মদ আশরাফুলকে বাদ দিয়ে সেখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে। এনএসসি’র এই সিদ্ধান্তে বুলবুলের জন্য বিসিবি’র নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ সুগম হয়েছে। তিনি এখন ঢাকা বিভাগের পরিচালক পদে লড়তে পারবেন এবং সেখান থেকে সভাপতি পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন। এই অ্যাডহক কমিটিতে বুলবুল ছাড়াও আরও ১০ জন সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকেই ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক খেলোয়াড়। একই সঙ্গে ঢাকা জেলার অ্যাডহক কমিটিতেও পরিবর্তন এসেছে। যেখানে নাজমুল আবেদিন ফাহিমকে যুক্ত করা হয়েছে সাবেক ক্রিকেটার সাথিরা আক্তার জেসির পরিবর্তে। এই পরিবর্তনগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, বিসিবি নির্বাচনে ক্ষমতা ও প্রভাবের খেলা এখনই শুরু হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের নির্বাচনের ঘোষণা এবারের নির্বাচনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল এই ক্রিকেটার প্রথমবার বিসিবি’র পরিচালক পদে আসতে আগ্রহী। তিনি কোন ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করবেন, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও, তার উপস্থিতি নির্বাচনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ক্রিকেট মহলে গুঞ্জন আছে, তামিম শুধু পরিচালক পদেই থেমে থাকবেন না, বরং তিনি সভাপতি পদের জন্যও লড়বেন। যদি তা হয়, তাহলে সাবেক দুই অধিনায়ক- তামিম ইকবাল ও আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মধ্যে এক দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাবে।