অবশেষে বিজয় এসেছে নেপালে। গতকাল টেলিভিশনে দেয়া বিবৃতিতে পদত্যাগের ঘোষণা করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। এর আগেই ক্রাউন ইম্পেরিয়াল হোটেলে আটকা পড়ে বাংলাদেশ দল। নিরাপত্তা বাহিনীর সবুজ সংকেত পেলেই দল নিয়ে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ক্রাউন ইম্পেরিয়াল হোটেল ছাড়তো টিম বাস। তবে এরপরই এয়ারপোর্ট বন্ধের খবরে দেশে ফেরা হয়নি জামাল-তপুদের। বাংলাদেশ সময় আজ সকাল সোয়া ৯টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরার কথা বাংলাদেশ দলের। বাংলাদেশ দলকে ফিরিয়ে আনতে গতকাল নেপালে একটি বিমান পাঠানো হয়। তবে বিমানটি নামতে না পেরে ফিরে আসে। সব ঠিকঠাক থাকলে, আজ সকালের একটি বিমানে দেশে ফেরার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের পর দেশে সংঘর্ষ এতটাই বেড়ে যায় যে, নিরাপত্তার কারণে টিম হোটেল থেকে বের হতে পারেনি দল। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করে কিছুক্ষণ পর সেটি ডিলিট করে দেন জামাল ভূঁইয়া। সেখানে দেখা যায়, তাদের টিম হোটেলের পাশেই দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। আর জামাল বলছেন, আমরা এখানে সেইফ না।
এর আগে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী কাঠমান্ডুসহ নেপালের গুরুত্বপূর্ণ শহরে আন্দোলন চালায় জেন-জি প্রজন্ম। সরকার পতনের দাবিতে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা নেমে আসে রাজপথে, চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কারফিউ দিয়েও দমানো যায়নি তাদের। আগের দিন ২১ তাজা প্রাণ ঝড়তে দেখে আরও ভয়ঙ্কর রূপে আন্দোলনে নামে তারা। তাদের দমাতে হিমশিম খেতে হয় নেপাল পুলিশকে। সর্বশেষ দেশটির এয়ারপোর্ট শাটডাউন করা হয়। এতে করে গতকাল দেশে ফেরা হয়নি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের। গতকাল বেলা তিনটায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যোগে দেশে ফেরার কথা ছিল দলের। তবে নেপাল পুলিশের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হওয়ায় হোটেল থেকে টিম বাস ছাড়েনি। খেলোয়াড়রা দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন হোটেল লবিতে। উল্লেখ্য, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অনিয়ম এবং সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের অভিযোগে সরকার পতনের দাবীতে সোমবার থেকে কাঠমান্ডুসহ নেপালের সব বড় শহরে জেন-জি প্রজন্ম বিক্ষোভ প্রকাশ করে আসে। সোমবার তারা নেপাল পার্লামেন্ট হাউজে প্রবেশ করে। তাদের বাধা দিতে গিয়ে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে এবং দুই পক্ষের মধ্যে ব্যপক সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশের গুলির আঘাতে প্রথম দিনে ১৯জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়। বিক্ষোভ দমাতে সোমবার রাতে পদত্যাগ করেন নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। মঙ্গলবার সকালে পদ ছাড়েন দেশটির কৃষি মন্ত্রী। তাতেও লাভ হয়নি। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-সমাজের একটাই দাবি প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিসহ পুরো মন্ত্রী পরিষদকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।