ত্রিভুবন বিমানবন্দরে জামালরা, অবশেষে ফিরছেন দেশে
প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেপালে গিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন আর সহিংসতার মধ্যে কাঠমান্ডুতে আটকা পড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল অবশেষে দেশে ফিরছে।
জামাল ভূঁইয়ারা বৃহস্পতিবার সকালেই ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শফিকুর রহমান ও দূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তাও বিমানবন্দরে উপস্থিত রয়েছেন।
আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় আশা প্রকাশ করেছে, বিকাল ৩টার দিকে ওই বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসবেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের সম্মিলিত চেষ্টায় ফুটবল দলকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচের সংবাদ সংগ্রহের জন্য নেপালে যাওয়া সাংবাদিকরাও একই ফ্লাইটে ফিরছেন।
নেপালে বাংলাদেতশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা আটকা পড়া সাংবাদিকদের থামেল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন।
বাংলাদেশ ফুটবল দল ৩ সেপ্টেম্বর নেপালে গিয়েছিল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে। ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচ গোল শূন্য ড্র হয়। দ্বিতীয় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর।
কিন্তু সোশাল মিডিয়ার ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি আর দুর্নীতির প্রতিবাদে জেন-জি আন্দোলনে সহিংসত শুরু হলে দ্বিতীয় ম্যাচ বাতিল হয়ে যায়।
মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ২২ জনের মৃত্যুর পর নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ও মন্ত্রীদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।
নেপালের বিভিন্ন অংশে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে কারফিউ জারি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বিমানবন্দর। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফুটবল দল কাঠমান্ডুর হোটেলে আটকা পড়ে।
তাদের ফিরিয়ে আনতে বিমানের একটি ফ্লাইট মঙ্গলবার কাঠমান্ডু গেলেও ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অনুকূল পরিস্থিতি না থাকায় নামার অনুমতি পায়নি। পরে সেটি ঢাকায় ফিরে আসে।
বুধবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
“দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
“প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।”
বাংলাদেশ দলের মিডফিল্ডার সোহেল রানা বুধবার এক ভিডিও বার্তায় নিজেদের অবস্থা জানিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
তিনি বলেন, “গতকালকের থেকে আমাদের আজকের অবস্থা খুবই ভালো। গতকাল নেপালে যে একটা পরিস্থিতি ছিল…কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। যেহেতু সেনাবাহিনী সব কিছুর দায়িত্ব নিয়েছে, তো আমাদের বর্তমান অবস্থা ভালো।”
“পরিবারের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। যেহেতু এখন নিরাপত্তার বিষয়গুলো সেনাবাহিনীর হাতে, তো এমন পরিস্থিতিতে দেশে পরিবারের সবাই এখন আর চিন্তা করছে না। হোটেলে আমরা খুব ভালো অবস্থায় রয়েছি। সব মিলিয়ে পরিবার এখন চিন্তা মুক্ত রয়েছে।”