নেপালে জেন জির সঙ্গে পুলিশের সংর্ঘষ, দুই দলের অনুশীলন বাতিল

নেপালে জেন জির সঙ্গে পুলিশের সংর্ঘষ, দুই দলের অনুশীলন বাতিল


বেশকিছু দিন ধরেই নেপাল সরকারের দুনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলো দেশটির জেন জি প্রজন্ম বা যুব সমাজ। সম্প্রতি নেপালে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরকারের আদেশে নিষিদ্ধ হওয়া উসকে উঠে তারা। আজ সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয় এবং অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে বাংলাদেশ ফুটবল দলের বিকেল বিকাল তিনটার নির্ধারিত অনুশীলন বাতিল করেছে অলনেপাল ফুটবল ফেডারেশন (আনফা)। বাতিল করা হয় নেপাল ফুটবল দলের অনুশীলন। আগামীকাল এই দুই দলের দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ আয়োজন নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
দুর্নীতি ও সামাজামিক যোগাযোগ বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে নেপালের যুব সমাজ। যাকে জেনজি আন্দোলন বলছে এখানকার জনগন। দুপুরে যা রূপনেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এক পর্যায়ে নেপালের পার্লামেন্টও দখলে নেয় জেন জিরা। স্থানীয় সাংবাদিকের মাধ্যমে জানা যায় দুপুরের আগেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ১৪জন বিক্ষোভকারীরা। কুটনৈতিক পারাতে নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তার কারণে নির্ধারিত সময়ে দশরথ স্টেডয়ামে অনুশীলনে যেতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল দল। বিকাল তিনটার অনুশীলনে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে হোটেলের লবিতেও এসেছিলেন জামাল-তপুরা। কিন্তু আয়োজকরা নিরাপত্তা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় বাংলাদেশ দল আর হোটেল ছাড়েনি। দলের ম্যানেজার আমের খান বলেন,‘ আমরা মাঠে যাওয়ার জন্য লবিতে নেমেছিলাম। কিন্তু আনফা আমাদেও জানায় পুলিশি নিরাপত্তা দিতে পারবে না। আমরা বলেছি নিরাপত্তা না দিলে আমরা অনুশীলনে যাবো না। পওে নেপাল দলও নিরাপত্তার অভাবে অনুশীলন করেনি’। পরে দুই দলের অনুশীলন বাতিল করেছে আয়োজকরা। আগামীকাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। এনিয়ে সন্ধ্যায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে সভা করার কথা আয়োজকদের।
এদিকে জেন জিদের আন্দোলন শুরু হওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশ ও নেপালের কোচ। সেখানে সবকিছু ছাপিয়ে উঠে মাঠ প্রসঙ্গ। নানা কারণে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ শেষে খোদ নেপাল কোচ ম্যাট রস মাঠ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন। একই অভিযোগ ছিলো সফরকারী দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরার। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচের সংবাদ সম্মেলনেও মাঠ নিয়ে তার অসন্তোষের কথা পুর্নব্যক্ত কওে নেপালের কোচ বলেন,‘ মাঠের কারণেই প্ল্যান মতো খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি তার দলও। তবে দলের অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড ভারত খাওয়াজের বিদায়ী ম্যাচে ভালো ফুটবলই উপহার দিবে তার শিষ্যরা’। বাংলাদেশের কোচ কাবরের লক্ষ্য এক যুগ পর নেপালের মাটিয়ে জয়। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় শুরু হওয়ার কথা এই ম্যাচ।
নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই মাঠে প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের বাধা নেই। তাই প্রায় দুই বছর পর এই ভেন্যুতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল। আগেসম্মতি দেওয়া বাংলাদেশ শনিবার প্রথম প্রীতি ম্যাচ খেলার পর উপলব্ধি করতে পেরেছে, মাঠের দুরবস্থা। বড় বড় ঘাস, অসমান পিচ, নিয়মিত পানি না দেওয়ার কারণে যা-তা অবস্থা। এই কারণগুলো উল্লেখ করে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরা বলেন,‘এই মাঠ খেলার উপযোগী নয় মোটেও। তারপরেও আমাদেও মানিয়ে নিয়ে খেলতে হবে। প্রথম ম্যাচ এখানে আমরা খেলেছি। ভালো ম্যাচ হয়েছে। গতকাল আমরা সেখানে অনুশীলন করেছি। এখন মাঠকে ইস্যু বানিয়ে লাভ নেই। এখানেই আমাদের জিততে হবে। সেই প্রস্তুতি নিয়েই কাল (আজ) আমরা মাঠে যাবো।’ নেপাল বাংলাদেশের সম্প্রীতির দুই ম্যাচ রূপ নিয়েছে সিরিজে। যেখানে প্রথম ম্যাচটি গোল শূন্য ড্র করে মাঠ ছেড়েছে দুই দল। আজ যারা জিতবে তাদের হাতেই উঠবে ট্রফি। সেদিকে নজড় দিয়েই বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভঁইয়া বলেন,‘ কোচ আগেই বলেছে ম্যাচটি ফ্রেন্ডলি হলেও আমাদের নজড় তিন পয়েন্টে। আশা করছি আগের চেয়ে বেটার ফুটবল খেলেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বো আমরা।’ এখন পর্যন্ত নেপালের বিপক্ষে সব মিলিয়ে ২৯ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৪ ম্যাচ জিতলেও নেপালের মাটিতে সবশেষটি জয়টি এসেছে প্রায় এক যুগ আগে। ২০১৩ সালের ৪ মার্চ। চ্যালেঞ্জ কাপে ওই ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছিল ২-০ গোলে। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবশেষ জয়ও প্রায় পাঁচ বছর আগে। এবার আপেক্ষ ঘোচানোর পালা।