রোমাঞ্চে ভরা লড়াইয়ে শেষ মুহূর্তে দুটি গোল করে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে ইউভেন্তুস। ছবি: রয়টার্স

৮ গোলের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে হারের দুয়ার থেকে ইউভেন্তুসের অবিশ্বাস্য

নিষ্প্রাণ প্রথমার্ধের পর জমজমাট এক লড়াইয়ের দেখা মিলল আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে। দুই পাশেই হতে থাকল দুর্দান্ত সব গোল। দারুণ এক জয়ের সুবাস পাচ্ছিল যখন বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, তখনই যোগ করা সময়ে দুই গোল করে পরাজয়ের মুখ থেকে মূল্যবান পয়েন্ট আদায় করে নিল ইউভেন্তুস।

ঘরের মাঠে ৯৩ মিনিট পর্যন্ত ৪-২ গোলে পিছিয়ে ছিল ইউভেন্তুস। রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় ঠাসা, নাটকীয়তায় ভরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে ৪-৪ গোলে।

এই মাঠেই দর্শকরা আরেকটি শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের সাক্ষী হয়েছিল গত শনিবার; সেরি আর ম্যাচে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে জিতেছিল ইউভেন্তুস।

এবারের লড়াইয়ে সবগুলো গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথম পাঁচটি হয়েছে ২২ মিনিটের মধ্যে, ১০ মিনিটের মধ্যে পরের তিনটি।

বলের লড়াইয়ে দুই দলই ছিল প্রায় সমানে-সমান। গোলের জন্য ইউভেন্তুসের ১৯ শটের সাতটি ছিল লক্ষ্যে। ডর্টমুন্ড ১০টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে পাঁচটি।

পিছিয়ে পড়ে ইউভেন্তুস দুই দফায় সমতা ফেরানোর পরও ডর্টমুন্ড ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় ৮৬ মিনিটে। কিন্তু খুব কাছে গিয়েও জয়টা পাওয়া হলো না জার্মান দলটির।

দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে ইউভেন্তুসের হয়ে জোড়া গোল করেন দুসান ভ্লাহোভিচ। ইতালিয়ান দলটির অন্য দুই গোলদাতা কেনান ইলদিজ ও লয়ড কেলি।

ডর্টমুন্ডের হয়ে জালের দেখা পান কারিম আদেইয়েমি, ফিলিক্স মেচা, ইয়া কৌতো ও রামি বেনসেবেইনি।

প্রথমার্ধে বিবর্ণ ফুটবল খেলে দুই দলই, এই সময়ে কেবল দুটি শট ছিল লক্ষ্যে আর দুটিই ইউভেন্তুসের।

গোলের জন্য নিজেদের চতুর্থ ও লক্ষ্যে প্রথম শটে দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। সতীর্থের পাস ধরে একটু এগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন জার্মান ফরোয়ার্ড আদেইয়েমি।

৬৩তম মিনিটে দুর্দান্ত গোলে সমতা ফেরান ইলদিজ। বক্সের বাইরে থেকে তার শট দূরের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে জালে জড়ায়। তিন দিন আগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষেও বক্সের বাইরে থেকে শটে গোল করেছিলেন তুরস্কের ২০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

সেই রেশ থাকতেই দুই পাশের জালে বল যায় আরও একবার করে। ৬৫তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে গোল করে ডর্টমুন্ডকে দ্বিতীয়বার এগিয়ে নেন জার্মান মিডফিল্ডার মেচা।

৬৭তম মিনিটে সেটাও শোধ করে দেয় ইউভেন্তুস। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ভ্লাহোভিচ।

৭৪তম মিনিটে তৃতীয় দফায় এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে কাছের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন কৌতো।

৮০তম মিনিটে দুর্দান্ত সেভে ব্যবধান ধরে রাখেন ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। বক্সের বাইরে থেকে ইলদিজের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লাগে।

নির্ধারিত সময়ের চার মিনিট বাকি থাকতে সফল স্পট কিকে ডর্টমুন্ডের ব্যবধান বাড়ান বেনসেবেইনি। প্রতিপক্ষের হ্যান্ডবলের কারণে পেনাল্টি পেয়েছিল সফরকারীরা।

ডর্টমুন্ডের জয় মনে হচ্ছিল তখন কেবল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সব কিছু পাল্টে যায় ছয় মিনিট যোগ করা সময়ে।

চতুর্থ মিনিটে ডান দিক থেকে সতীর্থের পাসে ছুটে গিয়ে কাছ থেকে বল জালে পাঠান ভ্লাহোভিচ। ষষ্ঠ মিনিটে পরের গোলেও অবদান রাখেনি তিনি। ডান দিক থেকে তার ক্রসে বক্সে হেডে বল জালে পাঠান কেলি। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। এই গোলে ডর্টমুন্ডের রক্ষণের দায়ও ছিল যথেষ্ট, ফাঁকায় থেকে গোলটি করেন কেলি। ম্যাচের বাকি তখন ৪০ সেকেন্ড!

এমবাপের ২ পেনাল্টি গোলে ১০ জন নিয়েও রেয়াল মাদ্রিদের জয়

দুই বদলি খেলোয়াড়ের গোলে জয়ে শুরু আর্সেনালের