এশিয়া কাপে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের একটি দৃশ্য |সংগৃহীত

শিরোপার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো পাকিস্তান, আবারো হার শ্রীলঙ্কার

এশিয়া কাপের শিরোপা স্বপ্ন টিকে রইলো পাকিস্তানের, বেঁচে রইলো ফাইনালে যাবার আশা। রোমাঞ্চ ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে ম্যান ইন গ্রিনরা। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে লিখেছে লঙ্কাবধ গল্প।

১৩৪ রানের সহজ লক্ষ্য, তবে শুরুটা প্রত্যাশামতো হয়নি। একটা সময় তো দেখা দিয়েছিল অঘটনের শঙ্কা। তবে এরপর সেই শঙ্কা দূর করেন হোসাইন তালাত ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। পাকিস্তান পায় ৫ উইকেটের জয়।

এই জয়ে যেমন টিকে রইলো পাকিস্তানের শিরোপা স্বপ্ন, তেমন ফুরালো দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষা। ২০১৭ সালের পর টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কাকে হারালো তারা। সব মিলিয়ে এই জয় এলো ৫ ম্যাচ পর।

এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার আবুধাবিতে মুখোমুখি হয় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। দুই দলের জন্যই ছিল কঠিন পরীক্ষা। জিতলে বেঁচে থাকবে শিরোপা স্বপ্ন, হেরে গেলে কঠিন হবে সমীকরণ।

এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ভেঙে পড়ে ব্যাটিং লাইন আপ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৮ উইকেটে ১৩৩ রান করে তারা। যা ২ ওভার বাকি থাকতেই পেরিয়েছে পাকিস্তান।

লক্ষ্য তাড়ায় ৫.২ ওভারে উদ্বোধনী জুটিই বাঁচিয়ে দেয় পাকিস্তানকে। সাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামান মিলে ৫.২ ওভারে যোগ করেন ৪৫ রান। তবে এরপর ১৫ বলে ২৫ করে থিকসানার শিকার হন ফারহান।

এক বল পর আবার আঘাত আনেন থিকসানা, এবার ফেরেন আরেক ওপেনার ফখর জামান। ১৯ বলে ১৭ করে হাসারাঙ্গার অবিশ্বাস্য ক্যাচে পরিণত হন তিনি। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার আগে আরো বড় ধাক্কা দেন হাসারাঙ্গা।

পরের ওভারে বল হাতে এসে ফেরান সাইম আইয়ুবকে (১)। আর ৮.১ ওভারে তার শিকার পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা (৫) । ৫৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। দেখা দেয় শঙ্কা।

সেই শঙ্কা দূর করেন হোসাইন তালাত। মোহাম্মদ হারিসকে (১৩) নিয়ে ২৩ রান যোগ করার পর নাওয়াজকে নিয়ে নিশ্চিত করেন জয়। দেখেশুনে বের করে আনেন ম্যাচটা। জুটি গড়েন ৪১ বলে অপরাজিত ৫৮ রানের।

তালাত ৩০ বলে ৩২ ও নাওয়াজ ২৪ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। এই জয়ে বাংলাদেশকে ছাপিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে এখন পাকিস্তান। সমান পয়েন্ট হলেও রানরেটে এগিয়ে ম্যান ইন গ্রিনরা।

এর আগে প্রথম ওভার থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। যা থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেনি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে কুশাল মেন্ডিসকে ফেরান শাহিন আফ্রিদি। গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন কুশল।

এরপর দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ফের আঘাত আনেন, এবার শিকার পাথুম নিশাঙ্কা (৮)। এরপর শ্রীলঙ্কার হয়ে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন চারিথ আসালাঙ্কা ও কুশল পেরেরা। দু'জনে ১৯ বলে ২৫ রানের ছোট একটা জুটিও গড়েন।

তবে শ্রীলঙ্কার আর ফেরা হয়নি। হারিস রউফ এসে ভাঙেন জুটি। পেরেরা ফেরেন ১২ বলে ১৫ করে। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। তবে মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার কাজটা করেন হুসাইন তালাত।

অষ্টম ওভারে পরপর দুই বলে শ্রীলঙ্কার বর্তমান ও সাবেক দুই অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা ও দাসুন শানাকাকে ফেরান তালাত। ৭.৩ ওভারে মাত্র ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় তারা।

আসালাঙ্কাকে ১৯ বলে ২০ রানে থামানোর পর তালাত পরের বলেই দাসুন শানাকাকে ফেরান গোল্ডেন ডাক মেরে। তাতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ডাক নিয়ে আউট হওয়ার বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি (১৪টি)।

এদিকে দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন কামিন্দু মেন্ডিস ও লেগ স্পিনার ওয়ানেন্দু হাসারাঙ্গা। তবে কমে আসে রানের গতি। তাদের ২৮ বলের জুটিতে আসে মাত্র ২২ রান। ১৩ বলে ১৫ রান করে আউট হন হাসারাঙ্গা।

এরপর করুনারত্নেকে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে নেন। সপ্তম উইকেটে ৩৮ রান যোগ করেন দুজন। এর মাঝে ১৮.৩ ওভারে ৪৩ ফিফটি তুলে নেন কামিন্দু। তবে পরের বলেই শাহিন আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি।

শেষ ওভারে হারিস রউফের ওভার থেকে ৮ রান তুলেন করুনারত্নে। তাতে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ পৌঁছায় ১৩৩ রানে। তিনি অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ১৭ করে। পাকিস্তানের হয়ে শাহিন নেন ৩ উইকেট, তালাত নেন ২ উইকেট।