সান্তোসের হয়ে নেইমারের পারফরম্যান্সে নেই আগের সেই ধার। ছবি: রয়টার্স।

বিশ্বকাপ খেলতে নেইমারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখলেন কোচ

‘এই হলো’, ‘এই হচ্ছে’ করেও শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠছে না। ব্রাজিল দলে ফিরতেই পারছেন না নেইমার। অপেক্ষার পথ ধরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বও শেষ হলো গেল। এখন মুল প্রশ্ন, বিশ্বকাপে দেখা যাবে তো ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকাকে? কার্লো আনচেলত্তি জানালেন, বিশ্বকাপ খেলতে হলে পূরণ করতে হবে একটি শর্ত। সেটি স্বয়ং নেইমারকেও জানিয়ে রেখেছেন ব্রাজিলের কোচ।

সেই শর্তে অবশ্য বিস্ময়ের কিছু নেই। পুরোটাই ফিটনেস সংক্রান্ত। ফিটনেস পোক্ত হলেই কেবল নেইমারকে জাতীয় দলে ফেরানো হবে বলে সাফ জানিয়ে দিলের ব্রাজিলের কোচ।

যদিও এই ফিটনেস ঘিরেই কিছুদিন আগ জন্ম হয়েছিল বিতর্কের। এই মাসের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের স্কোয়াডে নেইমারকে জায়গা না দেওয়া কারণ হিসেবে আনচেলত্তি বলেছিলেন ‘মাইনর ইনজুরি।’ তবে পরে কোচের কথাকে উড়িয়ে দিয়ে নেইমার নিজে দাবি করেছিলেন, “আমাকে নেওয়া হয়নি টেকনিক্যাল কারণে, আমার শারীরিক অবস্থার কোনো সম্পর্ক এখানে নেই। তবে এটা কোচের সিদ্ধান্ত এবং সেটিকে সম্মান করি আমি।”

নেইমারের মন্তব্য ধোঁয়াশার জন্ম দেয় যথেষ্টই। দুজনের মধ্যে দূরত্ব ও সম্পর্কের টানাপোড়েনের গুঞ্জনও শুরু হয় এতে।

তবে ইএসপিএন ব্রাজিলকে আনচেলত্তি বললেন, ব্যাপারটি ফিটনেস সংক্রান্তই এবং তার দাবি, নেইমারকেই তা সরাসরি বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।

“আমরা অবশ্যই দেখতে চাইব না নেইমার কীভাবে খেলছে… তার প্রতিভা ও সামর্থ্য সবার জানা। তবে সেই প্রতিভাকে কাজে লাগাতে আধুনিক ফুটবলে ভালো শারীরিক অবস্থানে থাকা জরুরি। যদি সে নিজের সেরা শারীরিক অবস্থায় থাকে, জাতীয় দলে ঢুকতে তার কোনো সমস্যাই হবে না।”

“শারীরিকভাবে ভালো অবস্থায় নেইমারকে জাতীয় দলে পেতে চাই সবাই। তার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার এবং আমি তাকে বলেছি, ‘সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো প্রস্তুতি নিতে ও বিশ্বকাপে দলের সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরতে সহায়তা করতে পর্যাপ্ত সময় এখনও তোমার হাতে আছে।”

৭৯ গোল করে ব্রাজিলের ইতিহাসের সফলতম গোলস্কোরার দেশের জার্সিতে সবশেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের অক্টোবরে। এরপর দীর্ঘ পুনবার্সন কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন, আরও কিছু চোটের সঙ্গে লড়েছেন, ক্লাব ফুটবলে সৌদি আরবের অধ্যায় চুকিয়ে নিজ দেশে ফিরেছেন। কিন্তু তার আগের ধার আর সেভাবে ফেরেনি এখনও। সান্তোসের হয়ে কিছু ঝলক দেখালেও ধারাবাহিকতা সেভাবে দেখাতে পারেননি।

সবকিছু জয় করে যদি জাতীয় দলে ফিরতে পারেন নেইমার, তার সম্ভাব্য পজিশন নিয়েও আছে আলোচনা। আক্রমণভাগে নানা সময়ে যেমন কেন্দ্রে খেলেছেন তিনি, তেমনি খেলেছেন ওয়াইড পজিশনেও।

আনচেলত্তি অবশ্য নেইমারের পজিশন ঠিক করেই রেখেছেন। ৩৩ বছর বয়সী তারকার শারীরিক অবস্থার কথা ভেবেই কোচ সাজিয়েছেন পরিকল্পনা।

“তার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের (গত জুনে) আগে সে টিম হোটেলে এসেছিল এবং আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি। সবকিছুই পরিস্কার, পরিকল্পনাও আগের মতোই।”

“(তাকে দলে নেব) অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বা স্ট্রাইকার হিসেবে, তাকে কেন্দ্রস্থলে খেলতে হবে। সে বাইরের দিকে খেলতে পারবে না এখন। কারণ আধুনিক ফুটবলে এই পজিশনে খেলতে হলে ফরোয়ার্ডদের খুব ভালো শারীরিক অবস্থায় থাকতে হবে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে সে কোনো সমস্যা ছাড়াই খেলতে পারবে।”

গত জুনে বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। তবে কদিন আগে শেষ ম্যাচটি হেরে বাছাই শেষ করেছে তারা পঞ্চম স্থানে থেকে।

আগামী মাসে এশিয়া সফরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলার কথা ব্রাজিলের।