ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে সরকারের রোষানলে জকোভিচ, যেতে চাইছেন গ্রিসে
সার্বিয়ায় গত ডিসেম্বর থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে দেশটির শিক্ষার্থীরা। সার্বিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুকিচের বিরুদ্ধে এ আন্দোলনে শুরু থেকেই সমর্থন দিচ্ছেন নোভাক জকোভিচ। এ কারণেই সার্বিয়া প্রশাসনের চক্ষুশূল হয়েছেন এ টেনিস মহাতারকা। অবস্থা এমনই বেগতিক, যে জকোভিচের দেশ ছাড়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে।
সার্বিয়ার নেভি সাদ শহরে গত বছরের নভেম্বরে একটি রেলস্টেশনের ছাউনি ধসে ১৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ও স্থানীয় কতৃপক্ষের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু হয়, পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে ৪০০টিরও বেশি শহরে। ৩৮ বছর বয়সী জকোভিচ আন্দোলনের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লেখেন, ‘যুবসমাজের শক্তি ও তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্নে আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি। তাদের কণ্ঠস্বর শোনা জরুরি। সার্বিয়ার অসীম সম্ভাবনা আছে, আর শিক্ষিত তরুণরাই দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের যা দরকার, তা হলো বোঝাপড়া আর সম্মান।’
আন্দোলনকারীদের ওপর নেমে আসে সরকারি দমনপীড়ন। গত জানুয়ারিতে তারও নিন্দা জানান ২৪ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী জকোভিচ। সে মাসেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর তা আন্দোলনে নিহত এক ছাত্রকে উৎসর্গ করেন তিনি। বেলগ্রেড বাস্কেটবল ডার্বি দেখতে জকোভিচ যে টি-শার্টটি পড়ে যান, তাতে লেখা ছিল ‘স্টুডেন্টস অ্যান্ড চ্যাম্পিয়নস’।
মূলত এরপর থেকেই প্রেসিডেন্ট ভুকিচের সমর্থক সংবাদমাধ্যমগুলোর লক্ষ্যে পরিণত হন তিনি। স্থানীয় পত্রিকা ইনফর্মার তার কাজকে প্রথমে ‘লজ্জাজনক বলে আখ্যায়িত করে। পরে যখন খবর ছড়ায় যে তিনি গ্রিসে চলে যেতে চাইছেন, তখন তালে বলা হয় ‘ভুয়া দেশপ্রেমিক’। জকোভিচের বাবার প্রতিও শিশুকামিতার অভিযোগ আনা হয়। জকোভিচ সরকারপন্থীদের আরও নজরে আসেন উইম্বলডনে উদযাপন নাচের ভঙ্গিতে। অনেকেই মনে করেন, এটি ছাত্র আন্দলনের স্লোগান ‘পাম্প’-এর ইঙ্গিত। যদিও তা পুরোপুরি অস্বীকার করেন জকোভিচ।
পরিস্থিত যতই এগোচ্ছে, ততই নিজের দেশকে আর সুরক্ষিত মনে করছেন না জকোভিচ। সার্বিয়ার সরকারবিরোধী কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পরিবারের সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে গ্রিসের অ্যাথেন্সে চলে যেতে পারেন তিনি।