২০ ওভারে ৩০৪, ইংল্যান্ডের জয় ১৪৬ রানে!

২০ ওভারে ৩০৪, ইংল্যান্ডের জয় ১৪৬ রানে!

ওল্ড ট্রাফোর্ডে গতকাল ইংল্যান্ডের ইনিংসকে টর্নেডো হিসেবে আখ্যা দিলেও হয়ত কম হয়ে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয়ই ১৪৬ রানে। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ফিল সল্ট, জস বাটলারদের তান্ডবে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ৩০৪ রান তোলে ইংল্যান্ড। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আইসিসি’র দুই পূর্ণ সদস্য দেশের মধ্যে এটিই প্রথম তিনশ’ ছোঁয়া ইনিংস। সল্টের রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরিসহ রেকর্ডের বন্যা বয়ে গেছে এক ম্যাচেই।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো করলেও বেশিদূর যেতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৬.১ ওভারে ১৫৮ রানে গুঁটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ১৮ রান তুলে নিয়ে ইনিংস শুরু করে ইংল্যান্ড। বাটলারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুতই রান যোগ হতে থাকে ইংলিশদের খাতায়। সল্ট ও বাটলারের উদ্বোধনী জুটি থেকে ৫০ রান আসে ২০ বলেই। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শুরুর জুটিতে যৌথভাবে দ্রুততম ফিফটি এটিই। ৩০ বলে ব্যক্তিগত ৮৩ রানে বাটলার ফিরলে হাত খোলেন সল্ট। ৩৯ বলে শতক হাঁকিয়ে এ সংস্করণে ইংল্যান্ডের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড নিজের নামে লেখেন তিনি।

ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ছয়টি ইনিংসের মধ্যে চারটিই সল্টের। চার সেঞ্চুরিতে সল্ট পাশে বসেন সূর্যকুমার যাদবের। রেকর্ড ৫টি সেঞ্চুরি আছে রোহিত শর্মা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। শেষ পর্যন্ত ৬০ বলে ১৪১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন এ ডানহাতি ব্যাটার। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ডে নিজেকেই অনেকটা ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় উঠে গেছেন সল্ট। ২০২৩-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার ১১৯ ছিল ইংলিশদের আগের সেরা। আর বাবর আজমকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে বড় ইনিংসটি এখন সল্টের। সেঞ্চুরিয়নে ২০২১-এ ৫৯ বলে ১২২ রানের ইনিংস খেলেন বাবর। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সব দল মিলিয়ে সপ্তম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটি। ১৭২ রানে এ তালিকার শীর্ষে অস্ট্রেলিয়ার অ্যারন ফিঞ্চ।

নিজেদের ইনিংসে ইংল্যান্ড চার মারে ৩০টি এবং ছক্কা হাঁকায় ১৮টি। অর্থাৎ, কেবল বাউন্ডারি থেকেই ২২৮ রান তোলে ইংল্যান্ড, যা তাদের মোট রানের ৭৫%। এটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। শেষ পর্যন্ত সীমিত ওভারের ম্যাচে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে থামে ইংল্যান্ড, যা আবার এই সংস্করণের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। গতবছর নাইরোবিতে গাম্বিয়ার বিপক্ষে ২০ ওভারে ৩৪৪ রান তুলে রেকর্ড গড়ে জিম্বাবুয়ে। ২০২৩ এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপাল করে ৩১৪ রান। টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে আগের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি ছিল ভারতের। ২০২৪-এ হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান করে স্বাগতিকরা।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের জন্য রাতটি ছিল দুঃস্বপ্নের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এর আগে এত রান খাননি তারা।

কাগিসো রাবাদা চার ওভারে রান দেন ৭০, লিজাড উইলিয়ামসের তিন ওভারের খরচ ৬২ ও মার্কো ইয়ানসেন চার ওভারে দেন ৬০ রান। আন্তর্জাতিক-ঘরোয়া মিলিয়ে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এবারই প্রথম একই দলের বোলার এক ম্যাচে ৬০ বা তার বেশি রান দিলেন। দু’দল মিলিয়ে এ ম্যাচে রান ওঠে ৪৬২, ইংল্যান্ডের মাঠে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা সর্বোচ্চ। ১৪৬ রানের জয় টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়ের রেকর্ড। ২০১৯-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংলিশদের আগের রেকর্ডটি ছিল ১৩৭ রানের জয়। প্রোটিয়াদের জন্য এটি সবচেয়ে বড় হার। গত বছর তারা ভারতের কাছে হার দেখে ১৩৫ রানে।
তিন ম্যাচ সিরিজে এখন ১-১ সমতা। শেষ ম্যাচে আগামীকাল নটিংহ্যামে মুখোমুখি হবে দুদল।