বালাগঞ্জে পারিবারিক বিরোধের জেরে দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘটিত মারামারির ঘটনায় করা মামলায় তাদের প্রতিবেশী নিরীহ দরিদ্র পরিবারকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, নাজেহাল ও হয়রানি করা হয়েছে।
দীর্ঘ তদন্তে মামলার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালতে দেওয়া ফাইনাল প্রতিবেদনে বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ২৮ আগস্ট বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রতিবেদন দিয়েছে থানা পুলিশ।
জানা গেছে, বালাগঞ্জ ইউনিয়নের মাদারীপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে জুবেল আহমদ ও কামরুজ্জামান সোয়েবের মধ্যে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মারামারির ঘটনায় জুবেল আহত হয়ে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে দুই দিন ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেন।
দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘটিত মারামারির ঘটনায় জুবেল বাদী হয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় জুবেলের প্রতিবেশী হারুন মিয়ার ছেলে বদরুল, সাইদ, আলমগীরসহ হারুনকেও অভিযুক্ত করা হয়।
আদালতের আদেশে এফআইআর হিসেবে গণ্য করে ১৮ ফেব্রুয়ারি বালাগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়। এসআই কবির হোসেনকে এ মামলা তদন্তভার ন্যস্ত করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩১ মে চূড়ান্ত রিপোর্ট নং-৩ (ফাইনাল রিপোর্ট মিথ্যা) দেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্ত কর্মকর্তার করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুবেল ও সোয়েবের প্রতিবেশী হারুন মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে হারুনের বসতবাড়ির জায়গা জোর করে দখলের ষড়যন্ত্র করে আসছেন জুবেল ও সোয়েবের চাচা ধনাঢ্য আব্দুস সালাম।
এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। চাচা সালামের প্ররোচনায় জুবেল ও সোয়েবের মধ্যে সংঘটিত মারামারির ঘটনা ভিন্নদিকে মোড় দিতে জুবেল বাদী হয়ে প্রতিহিংসামূলক হয়রানির উদ্দেশ্যে হারুন ও তার ছেলেদের অভিযুক্ত করে এ মামলাটি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মামলার ঘটনাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। হারুন ও তার ছেলেদের মামলা হতে অব্যাহতি ও বাদী জুবেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে পেলান কোডের ২১১ ধারায় নন এফআইআর প্রসিকিউশন দাখিলের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে হারুনকে জোর করে ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে জুবেলের মা আছিয়া বেগম বাদী হয়ে ১৪ এপ্রিল হারুনের স্ত্রীসহ তার ৪ ছেলের নামে বালাগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
এ মামলায় জামিনের সুযোগ না পেয়ে হারুনের ছেলে সাইদ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী হারুন মিয়া বলেন, হয়রানিমূলক ২ মামলায় আমার ছেলে বদরুল প্রায় ১ মাস জেল খেটেছে। সালাম ও তার ভাতিজারা টাকার গরম দেখিয়ে জোর করে আমার বাড়িঘরের দখল নেওয়ার উদ্দেশ্যে বারবার আমাদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও বিগত দিন থেকে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।
সিলেট জজ কোর্জের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইকবাল হক চৌধুরী বলেন, আদালত হারুন ও তার ছেলেদেরকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বাদী জুবেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।