সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ছিল বুধবার, আগের রাতে মারা গেলেন বরের ভাবি
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে বিয়ের রাতে বরের অন্তঃসত্ত্বা ভাবির মৃত্যুর ঘটনায় বিয়েবাড়ি বিষাদে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়। বুধবার সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ছিল ওই গৃহবধূর।
জানা গেছে, রাত পোহালেই বর সবাইকে নিয়ে কনেকে আনতে যাবেন। বরের হাতে মেহেদিও পরানো হয়ে গেছে। রাত তখন ৩টা বাজে। হঠাৎ পুরো পরিবেশ বদলে যায়। বরের ভাবি আয়েশা বেগম (৪০) হার্টঅ্যাটাকে মারা যান। আয়েশা বেগম ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বুধবার সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ছিল। মায়ের সঙ্গে গর্ভে থাকা সেই সন্তানও মারা গেছে।
মুহূর্তেই বিয়েবাড়িতে বিষাদ নেমে আসে। কান্না আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পতনঊষার ইউনিয়নের ধুপাটিলা গ্রামে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে।
মৃত আয়েশা বেগম উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের আরব-আমিরাত প্রবাসী লাল মিয়ার স্ত্রী। আয়েশা বেগম তিন সন্তানের মা। মঙ্গলবার তার চতুর্থ সন্তান পৃথিবীতে আসার কথা ছিল।
এদিকে এ ঘটনার কারণে বিয়ের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। কনের বাড়ি উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নেই।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের ধুপাটিলা গ্রামের প্রবাসী যুবক আনসার মিয়ার বিয়ের দিন ছিল (মঙ্গলবার ৬ জুলাই)। বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে সোমবার রাতে সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ছিলেন। এর মধ্যে রাতে বড় ভাই লাল মিয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আয়েশা বেগমের শরীরে অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক শর্ট লাগে। এর কিছুক্ষণ পর তার হার্টঅ্যাটাক হয়। পরিবারের সদস্যরা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আয়েশা বেগম ও তার গর্ভের সন্তানকে মৃত ঘোষণা করেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পর বিয়ের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফটিকুল ইসলাম রাজু বলেন, ঘটনার পর বিয়ের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। দাফন কাজ সম্পন্ন শেষে হয়তো বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হবে।
আয়েশা বেগমের চাচাশ্বশুর ইসমাইল মিয়া বলেন, আমরা কী বলব কোনো ভাষা নেই। আয়েশা বেগমের স্বামী দেশে আসার পর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।