সিলেটের বহুল আলোচিত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁঞা ফের পলাতক হয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করায় এ গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে।
২০২০ সালের ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় এসআই আকবরকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই সময় তিনি সীমান্তের ওপারে খাসিয়াপল্লিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। স্থানীয় খাসিয়ারা কৌশলে তাকে বাংলাদেশে পাঠালে পুলিশ গ্রেফতার করে।
ওই মামলায় পিবিআইয়ের তদন্তে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
গত ১০ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে আকবর জামিন পান। পরদিন ১১ আগস্ট তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পান।
আকবরকে তার ভাই মো. আরিফ হোসেন ভুঁইয়া ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেনের জিম্মায় জামিন দেওয়া হয়েছিল।
তবে ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালত তার জামিন স্থগিত করে ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই সময় শেষ হলেও আকবর আদালতে হাজির হননি।
বুধবার সিলেট মহানগর জজ আদালতে মামলার ধার্য তারিখ থাকলেও আকবর হাজির হননি।
সরকারি কৌশলী (পিপি) আশিক উদ্দিন জানান, বিচারক অনুপস্থিত থাকায় এদিন শুনানি হয়নি এবং পরবর্তী তারিখ ধার্য হয়েছে ১৪ সেপ্টেম্বর।
এদিকে রায়হানের মা সালমা বেগম প্রথম থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে আকবর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। সম্প্রতি সিলেটে ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ কনফারেন্সেও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয় এবং তাকে খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
রায়হান হত্যা মামলায় আকবরসহ মোট ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আকবর ছাড়াও আরও দুজন পলাতক রয়েছেন। বরখাস্ত এসআই হাসান উদ্দিন ও সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান বর্তমানে ফ্রান্সে বসবাসরত। জামিনে থাকা কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশীদ সম্প্রতি আদালতে হাজির হননি। বর্তমানে কারাগারে আছেন মামলার অপর আসামি এএসআই আশেক এলাহী।
আইনজীবীরা বলছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে আত্মসমর্পণ না করায় আকবর এখন আনুষ্ঠানিকভাবে পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এ ঘটনায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।