কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির এই আবিষ্কার জীবনকে অনেক সহজ করেছে। যে কোনো প্রশ্ন করলেই সহজে উত্তর দিয়ে দেয় সে। যখন যা কিছু মনে আসছে এআই চ্যাটবটের কাছে জানতে চাইছেন। পরামর্শ চাইছেন যে কোনো কিছুর।
শুধু গুরুগম্ভীর আলোচনা নয়, সে লিখে দেয় কবিতা। রেসিপি থেকে শুরু করে গণিত সমাধান, ভার্সিটির অ্যাসাইনমেন্ট, রিপোর্টের সব ধরনের কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। শুধু আপনার আমার নয়, এআইয়ের উপর নির্ভর করছে প্রতিষ্ঠানগুলোও।
মাইক্রোসফট থেকে শুরু করে ছোটখাট প্রতিষ্ঠানেও এখন মানুষের বিকল্প এআই। ফলে চাকরি হারিয়ে বেকার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। আপনি যে সেক্টরেই চাকরি করুন না কেন, আপনার মাথার উপরে একটা অদৃশ্য খাঁড়া ঝুলছেই। সেটি হচ্ছে এআই। এর থেকে কি বাঁচার কোনো উপায় নেই?
অস্ট্রেলিয়ায় সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এআই আগামী দিনে চাকরি ও দক্ষতার উপর বড় প্রভাব ফেলবে। এতে যেমন উদ্বেগ রয়েছে, তেমনি কিছু ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়বেন সৃজনশীলতার সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। কারণ এআই এখন এমন সব লেখা বা কনটেন্ট তৈরি করছে, যেগুলোতে মৌলিকত্ব কম। ফলে যারা মৌলিক কাজ করেন, তাদের স্বীকৃতি পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে অফিস ক্লার্ক, রিসেপশনিস্ট, বুককিপার, সেলস ও মার্কেটিং কর্মী, বিজনেস অ্যানালিস্ট বা সিস্টেম অ্যানালিস্টদের চাকরি দ্রুত কমে যাবে। এসব কাজের বড় অংশই এআই করে ফেলবে।
তবে কিছু ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ বরং বাড়বে। যেমন-ক্লিনার, লন্ড্রি ওয়ার্কার, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও সেফটি, বিজনেস অ্যাডমিন ম্যানেজার, কনস্ট্রাকশন ও মাইনিং লেবার, আর হসপিটালিটি খাতে কর্মসংস্থানের চাহিদা আরও বাড়বে। এসব ক্ষেত্র মূলত হাতেকলমে কাজের সঙ্গে যুক্ত। ফলে এআই কখনোই এখানে মানুষের বিকল্প হতে পারবে না।
নতুন যারা কাজ শুরু করতে চান, তাদের জন্য রিপোর্টে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে-বুককিপিং, মার্কেটিং বা প্রোগ্রামিংয়ের পরিবর্তে নার্সিং, কনস্ট্রাকশন কিংবা হসপিটালিটি খাতে ক্যারিয়ার গড়লে চাকরির নিরাপত্তা বেশি থাকবে।
রিপোর্টে আরও বলা হচ্ছে, সবচেয়ে সংকট দেখা দিচ্ছে ভয়েস আর্টিস্টদের জন্য। কারণ এখন এআই দিয়েই কণ্ঠ রেকর্ড করা হচ্ছে। ফলে এই খাতে অন্তত ৮০ শতাংশ কাজ কমে যাচ্ছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান