এক্স থেকে আয় করবেন যেভাবে

এক্স থেকে আয় করবেন যেভাবে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম শুধু যোগাযোগ বা মত প্রকাশের মাধ্যম নয়, আজ এটি আয়ের বড় একটি উৎস হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ইলন মাস্ক টুইটার অধিগ্রহণ করে এর নাম পরিবর্তন করে এক্স (X) করার পর থেকে প্ল্যাটফর্মটি নতুনভাবে মনিটাইজেশনের সুযোগ তৈরি করেছে।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর থেকে শুরু করে সাংবাদিক, ব্লগার কিংবা সাধারণ ব্যবহারকারী-সবাই এখানে সঠিকভাবে কৌশল ব্যবহার করতে পারলে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।

আসুন এক্স থেকে কীভাবে আয় করা যায় তার কিছু কৌশল জেনে নেওয়া যাক-

১. অ্যাড রেভিনিউ শেয়ারিং প্রোগ্রাম

ইলন মাস্ক এক্সে চালু করেছেন বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের সুযোগ। এই প্রোগ্রামে যোগ দিলে ব্যবহারকারীর কনটেন্টের পাশে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, আর সেখান থেকে যে আয় হয় তার একটি অংশ কনটেন্ট নির্মাতাকে দেওয়া হয়। তবে শর্ত হলো ব্যবহারকারীর একটি পেইড ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট, যেটাকে এক্স প্রিমিয়াম অ্যাকাউন্ট বলে সেটি থাকতে হবে। নিয়মিতভাবে মানসম্মত কনটেন্ট পোস্ট করতে হবে যাতে এনগেজমেন্ট (লাইক, কমেন্ট, রি-পোস্ট, ইমপ্রেশন) বাড়ে। ন্যূনতম ৫০০ জন ফলোয়ার এবং গত ৩ মাসে অন্তত ৫ মিলিয়ন ইমপ্রেশন থাকতে হবে।

২. সাবস্ক্রিপশন থেকে আয়
এক্স ব্যবহারকারীদের জন্য কনটেন্ট সাবস্ক্রিপশনের সুবিধা চালু করেছে। অর্থাৎ কনটেন্ট ক্রিয়েটররা তাদের ফলোয়ারদের বিশেষ কনটেন্ট, এক্সক্লুসিভ পোস্ট, ভিডিও বা তথ্যের বিনিময়ে সাবস্ক্রিপশন ফি নিতে পারেন। সাবস্ক্রিপশন চালু করলে আপনার প্রোফাইলে একটি সাবস্ক্রিপশন বাটন যুক্ত হবে। আপনি চাইলে বিভিন্ন স্তরের সাবস্ক্রিপশন নির্ধারণ করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, বিশেষ বিশ্লেষণ, টিউটোরিয়াল, শিক্ষা কনটেন্ট, বা কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর গভীরতর তথ্য সাবস্ক্রাইবারদের জন্য এক্সক্লুসিভ করা যেতে পারে।

৩. স্পন্সরড কনটেন্ট বা ব্র্যান্ড কোলাবরেশন
এক্স এখনো অনেক ব্র্যান্ড ও কোম্পানির জন্য মার্কেটিংয়ের অন্যতম মাধ্যম। ফলোয়ার বেশি হলে ও প্রভাবশালী কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে কোম্পানিগুলো আপনাকে স্পন্সরড পোস্ট করার জন্য যোগাযোগ করবে। স্পন্সরড টুইটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার করে ভালো আয় করা সম্ভব। এজন্য আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড ভ্যালু ও প্রভাব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

৪. টিপস বা ডোনেশন
এক্স-এ টিপস ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের পছন্দের কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে অর্থ সহায়তা করতে পারেন। এটি অনেকটা ইউটিউবের ‘সুপার থ্যাংকস’ বা ফেসবুকের ‘স্টারস’-এর মতো। ব্যবহারকারীরা পেপাল, ক্যাশ অ্যাপ ইত্যাদি মাধ্যমে সরাসরি অর্থ পাঠাতে পারেন। যারা নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট দেন, তাদের জন্য এটি অতিরিক্ত আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে।

৫. ভিডিও কনটেন্ট থেকে আয়
ইলন মাস্ক এক্স-কে ভিডিও কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও গড়ে তুলছেন। ইউটিউবের মতো এখানে দীর্ঘ ভিডিও পোস্ট করে বিজ্ঞাপন এবং সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব হচ্ছে। ভিডিওর মধ্যে বিজ্ঞাপন যুক্ত হয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটর রেভিনিউ শেয়ার পান। যারা ভিডিও নির্মাতা বা স্ট্রিমার, তাদের জন্য এটি বড় সুযোগ।

৬. প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি
অনেকে এক্সকে ব্যবহার করছেন নিজের ব্যবসা প্রচারের জন্য। যেমন- ই-বুক, কোর্স, ডিজিটাল পণ্য, সফটওয়্যার বা এমনকি ফ্রিল্যান্স সার্ভিস। আপনি যদি উদ্যোক্তা হন, তাহলে এক্সকে মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে কাজে লাগিয়ে সরাসরি বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আয় করতে পারবেন। ফলোয়ারদের সঙ্গে আস্থা তৈরি হলে বিক্রি আরও বাড়ে।

৭. ট্রেন্ডিং টপিকে ভাইরাল কনটেন্ট তৈরি
এক্সে ভাইরাল কনটেন্ট তৈরি করলে দ্রুত ফলোয়ার বাড়ে। ফলোয়ার বাড়লে বিজ্ঞাপন রেভিনিউ, সাবস্ক্রিপশন, ব্র্যান্ড ডিল-সব ধরনের আয়ের সুযোগ বাড়ে। তাই সর্বদা চলমান ইস্যু, খবর, বিনোদন বা সমাজমুখী কনটেন্টের দিকে নজর রাখা জরুরি। তবে বিভ্রান্তিকর বা ভুয়া তথ্য ছড়ানো যাবে না, এতে অ্যাকাউন্ট ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

সূত্র: এক্স হেল্প সেন্টার