জ্বরের সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা মেনিনজাইটিসের প্রধান লক্ষণগুলোর একটিছবি: পেক্সেলস

মাথাব্যথার ওষুধই যখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়

মেডিকেশন ওভার ইউজ হেডেক বা ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারে মাথাব্যথা এমন এক সমস্যা, যখন ব্যথার ওষুধ খেলেই মাথাব্যথা হয়। যদি ৩ মাসের বেশি সময় ধরে, মাসে ১৫ দিনের বেশি ব্যথার ওষুধ খেতে হয়, তখন মস্তিষ্কে ব্যথা নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আসে। ফলে ওষুধ খেলে মাথাব্যথা তো কমেই না, উল্টো বেড়ে যায়, আবার ব্যথার ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিলে মাথাব্যথা কমে যায়। একেই বলা হয় মেডিকেশন ওভার ইউজ হেডেক।

যাঁদের দীর্ঘ সময় মাইগ্রেন বা টেনশন হেডেক থাকে এবং দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ খাচ্ছেন, তাঁদের হয়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশি হয়। বিভিন্ন রকমের ব্যথার ওষুধের কারণেই দেখা দেয় এমন সমস্যা। যেমন—
বারবিচুরেট
বারবিচুরেট–জাতীয় ওষুধ কিছু সাধারণ ওষুধের সংমিশ্রণ হিসেবে থাকতে পারে, যেমন অ্যাসিটামিনোফেন বা প্যারাসিটামল, ক্যাফেইন। এসব সাধারণত তীব্র মাথাব্যথায় দেওয়া হয়।
অপিওয়েড
এটি কখনো কখনো তীব্র ব্যথায় ব্যবহার করা হয়, যখন কোনোভাবেই ব্যথা কমছে না। অপিওয়েড বা আফিম-জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকেরা কম ব্যবহার করতে চান; কারণ, এতে আসক্তির ঝুঁকি থাকে।
ট্রিপটান
ট্রিপটান–জাতীয় ওষুধ, যেমন সুমাট্রিপটান, জলমিট্রিপটান তীব্র মাত্রার মাইগ্রেনে ব্যবহার করা হয়। এসব ওষুধ বেশি ব্যবহার করলেও মাথাব্যথা হয়।

ব্যথার ওষুধ খাওয়ার কারণে যদি ব্যথা হয়, তাহলে নিজে নিজে চিকিৎসা করা যাবে না। ব্যথার ওষুধ বন্ধ করে দিতে হবে। এমন ব্যথা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক খুঁজে বের করবেন, কেন আপনার এমন ব্যথা হচ্ছে, কোন ওষুধ থেকে হচ্ছে।

যে ওষুধ মাথাব্যথার কারণ, সেটাকে আগে বন্ধ করতে হবে বা ডোজ কমাতে হবে।

ব্যথার জন্য অন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

কী ধরনের মাথাব্যথা, তার ওপর ওষুধ নির্ভর করে। তাই কারণ বুঝে ওষুধ খেতে হবে।

হ্যাঁ, ব্যথার ওষুধ বন্ধ করে দিলে মাথাব্যথা ভালো হয়ে যায়।

মাথাব্যথা যদি হঠাৎ করেই শুরু হয় ও তীব্র হয় (যা আগে কখনো হয়নি)।

মাথাব্যথার সঙ্গে যদি খিঁচুনি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা আচরণে পরিবর্তন আসে।

কথা বলতে অসুবিধা হয়, কোনো পাশ দুর্বল হয়ে যায়, দেখতে সমস্যা হয়।

মাথাব্যথার সঙ্গে জ্বর ও ঘাড় শক্ত হয়ে যায়।

অন্তঃসত্ত্বা ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে হবে।

মাথাব্যথা হলেই যেকোনো ধরনের ওষুধ খাওয়া যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খান। প্রেসক্রিপশনে ডোজ ও কত দিন খাওয়া যাবে, দেখে নিন। তারপরও ব্যথা হলে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।