শিশুর হাঁটতে দেরি হচ্ছে কেন, সমাধান কী
শিশুর প্রথম ছোট ছোট পদক্ষেপের অপেক্ষায় থাকেন মা–বাবা। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগিয়ে যাওয়ার সময় শিশুকে অতিক্রম করতে হয় বেশ কয়েকটি ধাপ। যেমন নিজেই ঘাড় স্থির করে রাখতে পারা, নিজে নিজে বসতে শেখা, হামাগুড়ি দেওয়া, দাঁড়াতে শেখা, এরপরেই হাঁটতে শেখা। তবে কোনো কোনো শিশু হামাগুড়ি না দিয়ে সরাসরি হাঁটতে শিখে যায়। সাধারণত শিশুরা ১২-১৮ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে হাঁটতে শেখে।
কিছু লক্ষণ দেখে ধারণা করা যায়, শিশুর হাঁটতে শেখায় দেরি হতে পারে। যেমন শিশুর যদি ঘাড় স্থির রাখতে, বসা শিখতে দেরি হয়; জন্মের পর যদি খিঁচুনি হয়, শিশুর যদি ডিস্টোনিয়া বা নড়াচড়ায় অস্বাভাবিক সমস্যা থাকে, তাহলে সেসব ক্ষেত্রে সেই শিশুর হাঁটতে দেরি হতে পারে।
শিশু ১৮ মাস বয়সেও হাঁটতে না শিখলে সেটা যথেষ্ট দেরি বলেই ধরা যায়। তবে আরও অনেক কারণেই শিশুর হাঁটতে শেখা দেরি হতে পারে।
বংশগত কারণেও কোনো কোনো শিশু হাঁটা শেখে দেরিতে। মা–বাবা অথবা পরিবারের একাধিক সদস্য দেরিতে হাঁটতে শিখলেও এই ধারা দেখা যায়।
কোনো কোনো শিশু সবকিছুতে তার সমবয়সীদের চেয়ে একটু দেরিতে পরিপক্ব হয়।
অপুষ্টির জন্যও শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হতে পারে।
যেসব শিশু সময়ের আগে, কম ওজন নিয়ে জন্মায় অথবা জন্মের পরপরই কাঁদতে দেরি করে, তাদের ক্ষেত্রেও হাঁটা শেখায় দেরি হতে পারে।
ডাউন সিনড্রোমের মতো বংশগত কিছু রোগ থাকলেও শিশুর হাঁটতে শেখায় দেরি হতে পারে।
হাইপোথাইরিয়েডিজম ও রিকেটস রোগেও শিশুর হাঁটা শিখতে দেরি হতে পারে।
যেসব শিশু জন্মের পর থেকে বিভিন্ন রোগে ভোগে, তাদেরও এমন হতে পারে।
পায়ের মাংসপেশি দুর্বল হলে, মাংসপেশির কোনো অসুখ হলে, পায়ের গঠনে কোনো সমস্যা থাকলে শিশুর হাঁটতে দেরি হতে পারে।
মস্তিষ্ক, স্পাইনাল কর্ড ও স্নায়ুর বিভিন্ন সমস্যায়ও হাঁটা শেখায় দেরি হতে পারে।
হাঁটতে শেখায় দেরি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রয়োজন হলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে।
কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ থাকলে চিকিৎসা জরুরি।
শিশুর মাংসপেশি শক্তিশালী করার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়াম বা ফিজিওথেরাপি দিতে হতে পারে।
শিশুকে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে নিয়মিত।
শিশুকে হাঁটতে শেখায় উৎসাহ দিতে হবে।
নিয়মিত খাওয়াদাওয়া ও খেলাধুলা শিশুর মানসিক, শারীরিক বিকাশে ভূমিকা রাখে।