ভিটামিন বি১২–এর অভাবে হতে পারে ক্লান্তি ও মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যা, সমাধান কী?
ভিটামিন বি১২-র ঘাটতিতে এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ভিটামিন বি১২–কে ‘কোবালামিন’ নামেও ডাকা হয়। এটি পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। যা লোহিত রক্তকণিকা তৈরি, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা, ডিএনএ সংশ্লেষণ, শক্তি উৎপাদন, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোয় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি ধীরে ধীরে দেখা দেয়, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সেটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি আছে।
চরম ক্লান্তি ও দুর্বলতা।
মাথা ঘোরা বা দাঁড়িয়ে হঠাৎ ‘ব্ল্যাকআউট’ হওয়া।
হাত-পা ঝিনঝিন করা বা অবশ লাগা।
স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া ও মনোযোগে ঘাটতি।
চেহারায় হলদেটে ভাব বা ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া।
মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, হতাশা বা বিষণ্নতা।
জিবে জ্বালা ভাব বা লালচে হয়ে যাওয়া।
হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিকতা।
কারও মধ্যে এই উপসর্গগুলো যদি দীর্ঘদিন থাকে, তাহলে অবহেলা না করে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বি১২-র মাত্রা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ভিটামিন বি১২–এর ঘাটতিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন যে ধরনের মানুষ—
যাঁরা ভেগান খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত।
যাঁরা নিয়মিত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বা অ্যান্টাসিড খান।
৫০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি।
বড় ধরনের অন্ত্রের অস্ত্রোপচার যাঁরা করিয়েছেন।
যাঁদের হজমে সমস্যা আছে।
অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী মা।
প্রাকৃতিকভাবে শুধু প্রাণিজ উৎস থেকেই ভিটামিন বি১২ পাওয়া যায়।
এর মধ্যে আছে—
ডিমের কুসুম।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার (দই, চিজ)।
মাছ (স্যামন, টুনা, সার্ডিন)।
মাংস (গরু, খাসি, মুরগি)।
কলিজা।
সামুদ্রিক খাবার।
তবে যাঁরা ভেগান বা নিরামিষভোজী, তাঁদের বিকল্প উৎস থেকে এই ভিটামিন গ্রহণ করতে হয়। এর মধ্যে আছে—
বি১২ যোগ করা সয়ামিল্ক বা সিরিয়াল।
নিউট্রিশনাল ইস্ট।
চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনে অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ।
ফৌজিয়া আহমেদ , পুষ্টিবিদ