সহিংস বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
প্রকাশ: ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

দুর্নীতিবিরোধী সহিংস বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রকাশ সিলওয়াল।
প্রেসিডেন্টকে পাঠানো চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী অলি শর্মা বলেন, 'বিদ্যমান সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পাওয়ার উদ্দেশে আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। আজ থেকেই এটি কার্যকর হবে।'
ফেসবুক ও ইউটিউবসহ কয়েকটি সমাজমাধ্যম বন্ধের জেরে গতকাল সোমবার থেকে নেপালে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। অল্প সময়ের মধ্যে তা রূপ নেয় দুর্বার সরকারবিরোধী আন্দোলনে। নেপালের পার্লামেন্ট ভবনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিক্ষোভ-সমাবেশে মূলত জেন-জি প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দেয়।
বিক্ষোভ দমনে পুলিশের দমন-পীড়নের জেরে ১৯ জন নিহত ও ৪০০ জনেরও বেশি গুরুতর আহত হয়।
এই ঘটনার দায় নিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে সমাজমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত তুলে নেওয়া হয়। পাশাপাশি কাঠমান্ডুসহ অন্যান্য জায়গায় কারফিউ জারি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সেই আদেশ মানেননি। তারা কারফিউ উপেক্ষা করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন।
বিক্ষোভের এক পর্যায়ে কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান রাজনৈতিক নেতা ও মন্ত্রীর বাসায় ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এরপর সেনাপ্রধান প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হওয়ায় দেশটির সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে করে ভাইজেপাতি থেকে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়।
এর কিছুক্ষণ পরই আসে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা।
গত বছর চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান অলি শর্মা (৭৩)। তার দল কমিউনিস্ট পার্টি মধ্য-বামপন্থি নেপালি কংগ্রেস দলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করে। তবে চলতি মেয়াদে পার্লামেন্টে বেশ কয়েকবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্রেক হয়।
বেশ কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে স্থবিরতা তিন কোটি মানুষের দেশটিতে হতাশার জন্ম দিয়েছে, যা এই বিক্ষোভে ইন্ধন জুগিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মত দেন।