জামায়াত দেশ ও জাতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে: জুবায়ের
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে অতিক্রম করছে। জামায়াতে ইসলামী ব্যক্তি বা দলের চেয়ে দেশ ও জাতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে, জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ৫ আগস্টের পরে বাংলাদেশের মানুষের বিশাল প্রত্যাশাকে সামনে রেখে জামায়াত কাজ করছে। জাতীয় সব ক্রান্তিলগ্নে ধৈর্য ধারণ করে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে।
তিনি সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকাল ৩টায় মিরপুর-১৩ এর ৪ নং কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল জোনে ( ঢাকা-১৫ আসনের উদ্যোগে) এক মহিলা সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ যাতে তার মর্যাদা ও অধিকার পায় এবং যে ধর্মই অনুসরণ করুক না কেন স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে—জামায়াত ইসলামী সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বিগত যুগে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ও একনায়কতন্ত্রের কারণে আমাদের উপর ভয়াবহ জুলুম- নিপীড়ন চালানো হয়েছে। সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারা, বৃদ্ধ ও শিশুরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের ওলামায়ে কেরামও রেহায় পায়নি। শীর্ষস্থানীয় আলেমদের কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং সব ধরনের কষ্টের মধ্যে রাখা হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আলেম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে দীর্ঘ ১৪ বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। মিথ্যা মামলা ও সাক্ষীর মাধ্যমে তাকে জুলুমের চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা সহযোগিতা থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা ও মীর কাসেম আলীসহ শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল ভোটারবিহীন, ২০১৮ সালের নির্বাচন জাতির সবচেয়ে লজ্জাজনক এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল প্রহসনমূলক। এই তিনটি নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিকে কবর দিয়েছে। তাই জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে ভবিষ্যৎ নির্বাচনসহ সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশে থাকা দেড় কোটির বেশি প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং অস্ত্র, পেশীশক্তি ও কালো টাকা মুক্ত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
তিনি নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে প্রথমবার যারা ভোট দিবে তাদের কাছে পৌঁছানোর আহ্বান জানান এবং বলেন, এই আসনের ডা. শফিকুর রহমান শুধু জামায়াতের আমীরই নন, তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত, গ্রহণযোগ্য ও আস্থাভাজন ব্যক্তি। তিনি তার দলীয় পরিচয় এর ঊর্ধ্বে একজন শীর্ষস্থানীয় জাতীয় নেতা হয়েছেন। সংকটময় মুহূর্তে তিনি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় দায়িত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি তার দলের দায়িত্ব চেয়ে, তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক দায়িত্বের চেয়ে সামাজিক, রাজনৈতিক জাতীয় দায়িত্ব কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এই ব্যক্তিকে আমরা আলহামদুলিল্লাহ এখানে পেয়েছি। আমি আশা করছি সবার সহযোগিতা এবং দোয়া নিয়ে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা তাকে চাইলে ইনশাল্লাহ তিনি এখানে বিজয় লাভ করবেন।
আসন পরিচালক কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও আমীর ঢাকা মহানগরী উত্তর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন,কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সেক্রেটারি ঢাকা মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম।
সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি ডা.ফখরুদ্দিন মানিক।
উপস্থিত ছিলেন মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও মিরপুর পূর্ব থানা আমীর শাহ আলম তুহিন, কাফরুল দক্ষিণ থানা আমীর উপাধ্যক্ষ আনোয়ারুল করিম, কাফরুল উত্তর থানা আমীর রেজাউল করিম প্রমুখ। কয়েক হাজার নারী সমাবেশে যোগ দেন।
আরও পড়ুন